বেতন বৃদ্ধি ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে কুষ্টিয়া পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা কর্মবিরতি পালন করছে। ফলে বাড়ির সামনে ও সড়কের সর্বত্র যত্রতত্র ময়লা আবর্জন পড়ে থাকায় নাগরিকদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
রোববার (১৩ জুলাই) সকালে তারা পৌরসভা চত্বরে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে অভিনব প্রতিবাদ জানায়।
এ দিকে গত শুক্রবার থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। এতে শহরের বিভিন্ন স্থানে এবং আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকার সামনের ময়লা আবর্জনা না সরানোর কারণে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বলেন, ‘কুষ্টিয়া পৌরসভায় প্রায় ৪৮০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করেন। একজন দিনমজুর দিন হাজিরা ৫০০ টাকা পেলেও আমরা ময়লা-আবর্জনার কাজ করে হাজিরা পাই ২৭৫ টাকা। তাই বাধ্য হয়ে তিন দফা দাবি আদায়ে পৌরসভার গেটে ময়লা ফেলে প্রতিবাদ ও কর্মবিরতি পালন করছি। এর আগে এসব দাবি বাস্তবায়নে পৌর কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি।’
কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র পদশূন্য থাকায় প্রশাসক হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মিজানুর রহমান দায়িত্ব পালন করছেন।
পৌর নাগরিকদের অনেকেরই অভিযোগ, প্রশাসকের মূল দায়িত্বের বাইরে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের কারণে পৌর নাগরিকরা নানা ধরনের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশেষ করে পরিচ্ছন্নতা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানি সরবরাহ, সড়ক মেরামতসহ দৈনন্দিন নাগরিক সেবায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো: মিজানুর রহমান জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাদের ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এরপরেও তারা কোনো প্রকার আলাপ-আলোচনা ছাড়াই এ কর্মসূচি পালন করছেন। আমরা তাদের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
অন্যদিকে, প্রশাসক একাধিক দায়িত্ব পালনের কারণে পৌরসভার জরুরি সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান হচ্ছে না বলে নাগরিকদের অভিযোগ। সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে জন্ম-মৃত্যু সনদ ও নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট নিয়ে। এমনকি পৌরসভায় নির্মাণ কাজের নকঁশা অনুমোদনেও দীর্ঘদিন অপেক্ষা করা লাগছে।
অনেকেই বলছেন, নির্বাচিত মেয়র না থাকায় পৌরসভার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা কমে গেছে। এতে সাধারণ মানুষ তাদের দৈনন্দিন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং নাগরিক ভোগান্তি বাড়ছে।
স্থানীয়রা দ্রুত নির্বাচিত মেয়র অথবা একটা স্থায়ী প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে পৌরবাসীদের দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা এবং পরিচ্ছন্ন কর্মীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে পৌরসভার স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন।