ডিপ্লোমাধারীদের অযৌক্তিক দাবির প্রতিবাদে এবং তিন দফা দাবিতে ট্রেন ও রেলপথ অবরোধ করে ‘এগ্রিব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা ওই কর্মসূচি পালন করেন।
পাঁচ ঘণ্টা পর বিকেল ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম ও পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে রেলপথ অবরোধ তুলে নেয়ার আহ্বান জানান।
আগামী মঙ্গলবার কৃষি উপদেষ্টার সাথে শিক্ষার্থীদের বৈঠকের আশ্বাসে পাঁচ ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
রোববার (৩১ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাকৃবি আব্দুল জব্বার মোড় সংলগ্ন রেললাইনের উপর অবস্থান নেয়। এসময় ঢাকা-মোহনগঞ্জ-ঢাকা রুটের একটি ট্রেন আটকে দেয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অসুস্থ রোগী ও যাত্রীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ট্রেনটি ছেড়ে দেয়। এতে দেড় ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। এরপর রেল লাইনের উপর অবস্থান নিয়ে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যায়।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আক্তার হোসেন জানান, বেলা সাড়ে ১১টা থেকে আনুমানিক ২৫ মিনিট বন্ধ থাকার পর প্রশাসনের আশ্বাসে ট্রেনটি ছেড়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, এই আন্দোলন ‘কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে পরিচালিত হচ্ছে। তাদের মূল দাবিগুলো হলো কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, বিএডিসি ও অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের দশম গ্রেডের পদগুলো শুধুমাত্র কৃষিবিদদের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে।
এছাড়াও, কোনো ডিপ্লোমাধারীরা যেন নামের পাশে ‘কৃষিবিদ’ পদবি ব্যবহার করতে না পারেন, সে বিষয়েও তারা সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। পেশাগত সম্মান এবং অধিকার রক্ষা করতে চান বলেও দাবি করেন তারা। নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ব্যতীত ৯ম গ্রেডে (বিএডিসির কোটা বাতিল) পদোন্নতির কোনো সুযোগ রাখা যাবে না।
রুবেল আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ পাঁচ বছর পড়াশোনা করে এই ডিগ্রি অর্জন করি। অথচ ডিপ্লোমাধারীরা যদি আমাদের মতোই পদবি ব্যবহার করেন, তাহলে আমাদের এই ডিগ্রির গুরুত্ব কোথায়? আমরা চাই সরকার দ্রুত দাবিগুলো মেনে নিন।’
সুমাইয়া আক্তার নামের আরেক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমরা চাই না সাধারণ মানুষের কোনো দুর্ভোগ হোক। কিন্তু আমাদের দাবিগুলো আদায়ের জন্য এর চেয়ে ভালো কোনো উপায় আমাদের কাছে নেই। যদি সরকার আমাদের দাবিগুলো না মানে, তাহলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচিতে যাব।’
আন্দোলনকারী কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কতিপয় কৃষিবিদ ডিপ্লোমাদের দোসর হিসেবে কাজ করছেন এবং ডিপ্লোমাদের দাবির প্রতি মৌন সমর্থন ও ইন্ধন যোগাচ্ছেন। কৃষি সেক্টরের ধ্বংস ও অরাজকতা ঠেকাতে ডিপ্লোমাদের অনায্য দাবির মোকাবেলা করবেন তারা।
মিজু আহমেদ বলেন, “আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি। আজকে বাংলাদেশের সকল কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়ে ‘এগ্রিব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছে।”