চুয়াডাঙ্গায় স্পিরিটপানে ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ৪লাশ উত্তোলন

ত ৯ অক্টোবর দিবাগত রাতে ডিঙ্গেদহ বাজার এলাকায় কয়েকজন একসঙ্গে বিষাক্ত স্পিরিট (অ্যালকোহল) পান করেন। পরদিন তারা সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বিভিন্ন সময়ে একে একে ৫ জনের মৃত্যু হয়। এরপর ১২ অক্টোবর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যুর পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

হুসাইন মালিক, চুয়াডাঙ্গা

Location :

Chuadanga

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকায় স্পিরিটপানে ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনায় কবর থেকে চারজনের লাশ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নূরুল হুদা মনির উপস্থিতিতে কবর লাশ তোলা হয়। এসময় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পিরোজখালী গ্রামের লাল্টু হোসেন, খেজুরা গ্রামের সেলিম (৪৫), নফরকান্দি গ্রামের খেদের আলী (৫০) ও শংকরচন্দ্র গ্রামের শহিদুল মোল্লার উত্তোলন করা হয়।

এর আগে গত ৯ অক্টোবর দিবাগত রাতে ডিঙ্গেদহ বাজার এলাকায় কয়েকজন একসঙ্গে বিষাক্ত স্পিরিট (অ্যালকোহল) পান করেন। পরদিন তারা সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বিভিন্ন সময়ে একে একে ৫ জনের মৃত্যু হয়। এরপর ১২ অক্টোবর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যুর পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। মৃতদের দুজনের লাশ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলেও আগের চারজনকে পরিবারের সদস্যরা গোপনে দাফন করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হোসেন আলী বলেন, গত ১৩ অক্টোবর নিহত লাল্টুর ভাই রাকিব বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, মামলা দায়েরের আগেই মারা যাওয়া চারজনকে গোপনে দাফন করা হয়েছিল। পরে ১৫ অক্টোবর আমরা আদালতে লাশ উত্তোলনের আবেদন করি। আদালত ১৬ অক্টোবর লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন এবং জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের আদেশ দেন।

তিনি আরও জানান, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ চারজনের লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে ঘটনাটির সঙ্গে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিষাক্ত স্পিরিটের যোগসূত্র পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তে জানা গেছে, লাইসেন্সবিহীনভাবে অ্যালকোহল বিক্রি ও সরবরাহের সঙ্গে স্থানীয় একটি চক্র জড়িত।

মামলা দায়েরের পর চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঝিনাইদহ থেকে মূল আসামি ফারুক আহমেদ ওরফে ‘অ্যালকো ফারুক’ (৪০) ও তার সহযোগী জুমাত আলীকে (৪৬) গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১১৭ বোতল স্পিরিট।

জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক স্বীকার করেছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হোমিও চিকিৎসার আড়ালে বিষাক্ত স্পিরিট-অ্যালকোহল বিক্রি করে আসছিলেন এবং চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় তা সরবরাহ দিতেন।

সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নূরুল হুদা মনির বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি দায়িত্ব পালন করেছি। আমার উপস্থিতিতে চারজনের লাশ উত্তোলনের পর ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Topics