সিলেটে ক্রীড়া সংস্থার নেতা খুন, আটক ছেলে

পারিবারিক বিরোধ ও সম্পত্তি নিয়ে বিরোধসহ একাধিক বিষয় সামনে রেখে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

এমজেএইচ জামিল, সিলেট ব্যুরো

Location :

Sylhet
নয়া দিগন্ত

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের নেতা আব্দুর রাজ্জাক হত্যার ঘটনায় তার ছেলে আসাদ আহমদকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি মামলা করেছে। ওই মামলায় নিহতের ছেলে আসাদকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

শনিবার (১ নভেম্বর) আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে সন্ধ্যায় এর সত্যতা নিশ্চিত করেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার দুপুরে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। বিকেলে তার লাশ দাফন হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই সন্দেহবশত নিহতের ছেলে আসাদকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে কিছু ক্লু পাওয়া গেছে, আরো জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সম্পত্তিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে আব্দুর রাজ্জাককে হত্যা করা হতে পারে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা করা হয়নি। ফলে পুলিশ বাদি হয়েই একটি মামলা করেছে। এতে ছেলেকে আসামি করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ঘরে যেহেতু বাইরের মানুষ প্রবেশ করেনি তাই ঘরের মানুষই হত্যার ঘটনাটি ঘটিয়েছে। সন্দেহের ভিত্তিতে ঘরের মানুষকে আটক করে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা খুবই শক্ত মানুষ। কী কারণে হত্যা করেছে সেটা স্বীকার করতে চায় না। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করব। পুলিশ বাদি হয়ে ইতোমধ্যে একটি মামলা করা হয়েছে।’

জানা যায়, গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে নিজ বাসার ছাদের সিঁড়ি থেকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের তেলিরাই গ্রামের মরহুম মৌলুল হোসেনের ছেলে।

এর আগে শুক্রবার পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ফজরের নামাজ পড়ে বাসার ছাদে হাঁটতে যান আবদুর রাজ্জাক। পরে সকাল ৯টার দিকে তাকে বাসায় না পেয়ে ছাদে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা তার রক্তাক্ত লাশ দেখতে পায়।

তবে স্বজনরা জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজে কাউকে বাড়িতে প্রবেশ বা বের হতে দেখা যায়নি। এছাড়া প্রধান ফটক ছিল তালাবদ্ধ। পাশাপাশি পারিবারিকভাবেও ছিল না কোনো সমস্যা। তবে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই তার মানসিক অবস্থার খারাপ হয়। এ নিয়ে তিনি ভারতেও চিকিৎসা নিয়েছিলেন। গত কয়েক মাসে তার মানসিক অবস্থার আরো অবনতি হয়েছিল। ফলে তিনি নিজ থেকে আত্মহত্যা করতে পারেন। কিন্তু পরিবারের এ বক্তব্য মানতে নারাজ পুলিশ।

এসএমপির দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘আব্দুর রাজ্জাককে খুন করা হয়েছে। আত্মহত্যা করলে নাড়িভুঁড়ি বের হবে কেন। তার শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্নও রয়েছে। বুকে, তলপেটে ও লিঙ্গ কাটা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পারিবারিক বিরোধ ও সম্পত্তি নিয়ে বিরোধসহ একাধিক বিষয় সামনে রেখে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।’