জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ‘দুই হাজার ছাত্র-জনতার শাহাদতের বিনিময়ে দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। সেই দেশে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য এখনো রাজপথে আন্দোলন করতে হচ্ছে। যা জুলাই চেতনা ও জুলাইযোদ্ধা শহীদ ও আহতদের রক্তের সাথে প্রতারণার শামিল। জামায়াত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। দেশে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে। তবে এর আগে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য নভেম্বরে গণভোট দিতে হবে। একইসাথে জামায়াতের ৫ দফা দাবি মেনে নিতে হবে। অন্যথায় জনতার চলমান আন্দোলন অগ্নিসফুলিঙ্গে রূপ নেবে।’
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে নগরীতে সিলেট জেলা ও মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে গণভোটের দাবিসহ ৫ দফা দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ জামায়াতের ৫ দফা দাবির প্রতি জনগণ এবং সব রাজনৈতিক দল একমত। শুধু একটি দলের কারণে গণভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তারা সবকিছু পরবর্তী সংসদের হাতে দেয়ার কথা বলে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। কিন্তু এ স্বপ্ন আর পূরণ হতে দেয়া হবে না। জুলাই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ছাড়া দেশে কোনো ভোট জনগণ হতে দিবে না ‘
তিনি বলেন, ‘কতিপয় নেতা জনগণের অধিকারের কথা বলেন, আবার পিআর পদ্ধতি বুঝেন না। এ পদ্ধতিতেই প্রতিটি ভোটারের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং জনগণ তার ভোটের মূল্য দেখতে পায়। দেশে এখনো লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিটি স্তরে ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বসে আছে। তারা নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে একটি গোষ্ঠীর পক্ষে কাজ করছেন। কোনো রকম নির্বাচন দিয়ে নিজেদের সেইফ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। আমাদের কথা স্পষ্ট, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হতে হবে। তবে এর আগে ৫ দফা দাবি মেনে নিতে হবে।’
কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর শহীদ মিনারের চৌহাট্টা পয়েন্ট থেকে মানববন্ধনটি শুরু হয়ে নগরীর জিন্দাবাজার-বন্দরবাজার হয়ে সুরমা মার্কেট পয়েন্ট (কিনব্রিজের মুখ) পর্যন্ত ১ কিলোমিটার দীর্ঘ বিস্তৃতি লাভ করে। মানববন্ধনে সিলেট জেলা ও মহানগর জামায়াতের বিভিন্ন শাখার পৃথক ব্যানার হাতে নিয়ে হাজারো জনশক্তি অংশ নেয়। এছাড়া মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শত শত মানুষ অংশ নেন।
সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ড. নূরুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা আমির ও সিলেট-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘দাঁড়িপাল্লার গণজোয়ার দেখে বিএনপি ভয় পেয়ে গেছে। ভয়ের কিছু নেই। জনগণ আপনাদের ভোট দিলে নির্বাচনের আগে গণভোট নিয়ে এত আপত্তি কেন? জামায়াত ভোট, আন্দোলন ও গণভোটে আছে। নির্বাচনের আগেই গণভোট দিতে হবে। কারণ অবাধ ও সুষ্টু নির্বাচনের জন্যই পিআর পদ্ধতি ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দরকার। আর এটি হলে অন্তর্বর্তী সরকারের কোমর শক্ত হবে।’
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সিলেট-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাফিজ আনওয়ার হোসাইন খান, জেলা সেক্রেটারি ও সিলেট-৪ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী জয়নাল আবেদীন, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা মাসুক আহমদ ও ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগরী সভাপতি শাহীন আহমেদ।