ফেনীতে প্রধান উপদেষ্টার আবাসন পেল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১০০ পরিবার

‘এই প্রকল্পের জন্য যত টাকা বাজেট দেয়া হয়েছিল তার প্রায় অর্ধেক দিয়েই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়াতে আমি আনন্দিত।’

শাহাদাত হোসাইন, ফেনী অফিস

Location :

Feni Sadar
ফেনীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠন
ফেনীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠন |নয়া দিগন্ত

ফেনীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র-গৃহহীন মানুষদের বসতভিটায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের ঘর দেয়া হয়েছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।

এ সময় সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের সুবিধাভোগী শহীদুল ইসলামের বসতবাড়ির সামনে উদ্‌বোধনী অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ১০১ বিগ্রেডের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো: মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোমেনা আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম, ফেনী সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন কান্তাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শর্শদী ইউনিয়নের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘বন্যায় আমার ঘরবাড়ি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় প্রধান উপদেষ্টার অর্থায়নে আমি ঘরটি পেয়ে খুব আনন্দিত।’

ফাজিলপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার এখানে টিনের একটা কাঁচাঘর ছিল, সেটা বন্যায় পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় প্রধান উপদেষ্টার অর্থায়নে আমি দু’রুমের একটা ঘর পেলাম। যেটা আমার নিজের অর্থায়নে করা অসম্ভব না।’

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার নিজস্ব অর্থায়নে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে এই আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। প্রকল্পের অধীনে ফেনীতে ১১০, নোয়াখালীতে ৯০, কুমিল্লায় ৭০ ও চট্টগ্রামে ৩০ সর্বমোট ৩০০ সুবিধাভোগীর কাছে আবাসন প্রকল্পের আওতায় ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়। ফেনী জেলায় ১১০টি ঘরের মধ্যে সদরে ৩৫টি, ফুলগাজীতে ২০টি, ছাগলনাইয়ায় ২০টি, পরশুরামে ২০টি, সোনাগাজীতে পাঁচটি ও দাগনভূঞায় ১০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে উপহার দেয়া হয়।

ভিডিও কনফারেন্সে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেয়ার অল্প কিছুদের মধ্যে হঠাৎ এই বন্যা শুরু হয়। দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপর আমরা আলোচনা করে আবাসন প্রকল্পের প্রস্তাবে রাজি হই।’

তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পের জন্য যত টাকা বাজেট দেয়া হয়েছিল তার প্রায় অর্ধেক দিয়েই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়াতে আমি আনন্দিত।’

সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গুণগত মান বজায় রেখে অল্প সময় ও খরচে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করেছে।’

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বন্যার পরে এই জেলায় দায়িত্ব পাই। তবে এখানে প্রায় এক হাজার ৮০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখান থেকে চাহিদা মোতাবেক ১১০ জনকে আবাসন প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মাণ করে চাবি হস্তান্তর করা হয়।’