মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে ঘোড়দৌড়ের আয়োজন করেন ইউনিয়নের কৃষকরা। ঘোড়দৌড় দেখার জন্য আশপাশের এলাকা থেকে হাজার মানুষের ঢল নামে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ত্রিশটি ঘোড়া ঘোড়দৌড়ে অংশগ্রহণ করে।
মঙ্গলবার (১৬ই ডিসেম্বর) দুপুর ৩টায় ওই উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের এম এ জলিল উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের জন্য দোয়া করা হয়, সে সাথে তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং শরিফ ওসমান হাদির সুস্থতার জন্যও দোয়া করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রামকৃষ্ণপুর ইউপি সদস্য মো: সোনামদ্দিন মোল্লা এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ জাহিদুর রহমান। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান, পংগু হাসপাতালের অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জারী বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা: সাহিদুর রহমান খান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মানিকগঞ্জ জেলা শাখার আমির হাফেজ কামরুল ইসলাম।
গ্রাম বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ঘোড়দৌড় কোথাও নেই বললেই চলে তবে এ বছর মহান বিজয় দিবসের দিনে গ্রাম বাংলার সাধারণ কৃষকরা এ ভিন্ন ধরনের আয়োজন করেন। এ আয়োজনে এলাকার জনসাধারণের মাঝে আনন্দ উল্লাসের কোনো কমতি ছিল না। সকাল থেকেই আশে পাশের গ্রাম থেকে ছুটে আসেন হাজারো দর্শনার্থী। এলাকাবাসীরা তাদের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে আর হারিয়ে যেতে দিতে চান না।
ঘোড়দৌড় দেখতে এসে মানজুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এ প্রথম ঘোড়দৌড় দেখলাম। এর আগে আমি জানতামই না ঘোড়দৌড় নামে কোনো খেলা আছে। আমার অনেক ভালো লেগেছে। আমি চাই এ ঘোড়দৌড় যেন প্রতিবছরই হয়।’
ডা: সাহিদুর রহমান খান বলেন, ‘আমি ছোট সময় থেকে ঘোড়দৌড় হয় শুনে এসেছি, দেখার সৌভাগ্য হয়নি। আমার ৪৬ বছর বয়সে প্রথম ঘোড়দৌড় দেখার সৌভাগ্য হলো। গ্রাম বাংলার কৃষকদের মাধ্যমে এ ঐতিহ্যকে ধরে রেখে প্রতিবছরই এই আয়োজন করা হবে।’
জেলা জামায়াতের আমির হাফেজ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘শৈশবে একবার নানার সাথে ঘোড়দৌড় দেখতে গিয়েছিলাম তারপর আর ঘোড়দৌড় হয়নি, সেজন্য দেখাও হয়নি। আজকে কয়েক যুগ পরে এই ধরনের আয়োজন দেখে অনেক ভালো লাগলো।’
প্রধান অতিথি মুহাম্মদ জাহিদুর রহমান বলেন, ‘আজকের এ আয়োজন একটি ঐতিহ্যবাহী খেলার আয়োজন। এ আয়োজন কৃষকদের আয়োজন। ঘোড়দৌড় আমাদের অঞ্চলে নেই বললেই চলে, আমরা আমাদের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ফিরে পেয়েছি। আমরা আমাদের গ্রাম বাংলার এ ঐতিহ্যকে আর হারাতে চাই না। প্রতিবছরই যেন গ্রাম বাংলায় এ ঘোড়দৌড় চালু থাকে আমরা সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’



