চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানাধীন আশরাফ আলী সড়কে ছয় বছরের এক শিশুকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী মাদকাসক্ত যুবক ফারুক প্রকাশ ইয়াবা ফারুকের বিরুদ্ধে। গত বছরের ৫ আগস্ট এ ঘটনা ঘটলেও দীর্ঘ এক বছর ধরে ভুক্তভোগী পরিবার মামলা করতে সাহস পায়নি।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম একাডেমি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিশুটির মা ও স্বজনরা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
শিশুটির মা জানান, ‘ঘুমের মধ্যে মেয়ে কেঁদে উঠে। তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে বলে চিৎকার দিয়ে উঠে। দিনে অপরিচিত কাউকে দেখলে দৌঁড়ে বাসার মধ্যে ঢুকে যায়। আমার শাড়ির আচলে মুখ লুকায়। তার মানসিক অবস্থা গত এক বছর ধরে এমন।’
তিনি বলেন, ‘ফারুক ও তার ভাইরা এলাকায় দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী এবং যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তাদের হুমকির কারণে ঘটনার পর থেকেই নিজস্ব বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। মামলা পর্যন্ত করতে সাহস পাইনি। এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত শিশুটি জানায়, ‘আমাকে ফারুক চাচা চকলেট ও মোবাইল দিবেন বলে তার বাসার দিকে নিয়ে যান। আমাকে সে কুলে তুলে আদর করতে থাকেন। এ সময় আমার মা ও লোকজন চিৎকার দিলে সে আমাকে রেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়।’
শিশুটি আরো জানায়, ‘ফারুক অনেকবার আমাকে এভাবে আদর করেন।’
শিশুটির দাদা মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, ‘ফারুক একজন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী ও মাদকাসক্ত। তার দুই ভাই যুবলীগের ক্যাডার আরিফ সিকদার মুন্না ও শাকিল। তারা সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মুহিবুল চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাদের প্রভাবে থানায় মামলা পর্যন্ত করতে পারিনি। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আইনের আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘সন্ত্রাসী ফারুক ও তার সহোদররা এলাকায় চাঁদাবাজি, দখল-বেদখল, ইয়াবা ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত। গত বছরের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে তাদের নেতৃত্বে কোতোয়ালীর মোড়, নিউ মার্কেট ও নতুন ব্রিজ এলাকায় ছাত্র-জনতার উপর গুলিবর্ষণ করে যুবলীগ ক্যাডাররা। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনার পর তারা আত্মগোপনে থাকলেও বর্তমানে এলাকায় এসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। আমাদের হুমকি দিচ্ছে। বাড়ি-ঘর তাদের দিয়ে দিতে বলছে। আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি।’