টানা বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত, দুশ্চিন্তায় পটুয়াখালীর চাষীরা

‘বীজতলা একটু উঁচু জায়গায় করতে হবে যেন বৃষ্টি হলে বীজতলা তলিয়ে না যায়। আর সমস্ত স্লুইস গেট খোলা রাখতে হবে। যাতে বৃষ্টির পানি নামতে কোনো সমস্যা না হয়।’

রফিকুল ইসলাম, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)

Location :

Patuakhali
ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি
ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি |নয়া দিগন্ত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে টানা বর্ষণে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মানুষের জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।

এতে ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছে চরমোন্তাজ, মৌডুবী, বড়বাইসদীয়া ও চালিতাবুনীয়া ইউনিয়নের মানুষ। রাস্তা-ঘাট, কৃষিজমিতে পানি জমে রয়েছে, ঘরবন্দি হয়ে ভোগান্তিতে দিন পার করছে চাষিরা।

টানা বৃষ্টিতে বেশি খতির মুখে পড়েছে কৃষকরা। আমন চাষের মৌসুম হলেও মাঠে পানি জমে থাকায় তারা সময়মতো বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না। যারা আগাম বীজতলা করেছেন তাও এখন হুমকির মুখে এতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে তলিয়ে গেছে বীজতলা।

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে হিমশিম খাচ্ছে সবজি চাষি ও গবাদিপশুর গৃহস্থ এবং খামারিরা। অতি বৃষ্টির কারণে গবাদিপশুর দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন প্রকার রোগ। এতে আতঙ্কে আছে খামারিরা। পুরো আষাঢ় মাস জুড়েই চলেছে বৃষ্টিপাত। সাথে ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত থাকায় উপকূল এলাকায় নদীপথে যোগাযোগও ব্যাহত হচ্ছে।

এছাড়া চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই ঝড়ের পূর্বাভাস থাকায় অনেকে এখনো বীজতলা তৈরিই করতে পারেনি। যারা বীজতলা তৈরি করেছেন, তাদের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকরা চিন্তিত, বৃষ্টির কারণে অনেকেই ঘর থেকে বের হতে পারছেন না।

কৃষকরা বলছেন, পানি পুরোপুরি টান দিলে সবজির গাছগুলো মরে যাবে। বীজতলা মাটিতে লুটে পড়বে আর এতে কৃষকদের প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ক্ষতি হবে। জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য বিভিন্ন সড়কে কালভার্ট থাকলেও প্রভাবশালীরা তাদের জায়গা ভরাটের কারণে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। দ্রুততম সময়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষকরা সবজি ও ধান চাষ করতে না পারলে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়বে।

কৃষক ইব্রাহিম হাওলাদার জানান, আগের মতো আর গরু-মহিষ দিয়ে জমি চাষ করেন না তারা। বর্তমানে চাষাবাদের জন্য ট্রাক্টরের ওপর নির্ভরশীলতা বেশি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ট্রাক্টর চালানোও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে আষাঢ় মাসে জমি প্রস্তুত করা ও হালচাষ করা যাচ্ছে না।

রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যারা বীজতলা তৈরি করেছেন তাদের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে রাখতে হবে। যারা এখনো বীজতলা তৈরি করেননি তারা আবহাওয়া ভালো হলে বীজতলা তৈরি করবেন, বীজতলা একটু উঁচু জায়গায় করতে হবে যেন বৃষ্টি হলে বীজতলা তলিয়ে না যায়। আর সমস্ত স্লুইস গেট খোলা রাখতে হবে। যাতে বৃষ্টির পানি নামতে কোনো সমস্যা না হয়।’