সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা
গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সময় কেন্দ্রে ভোটারের পায়ে গুলি চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির ঘটনায় সাত বছর পর থানায় মামলা করা হয়েছে।
রোববার (৬ এপ্রিল) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ।
জানা যায়, উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ বি এম মিজানুর রহমান খোকন ও ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শাহিনসহ ৩৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়াও আরো ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাত নামে রাখা হয়েছে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়নের পরান বয়েজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গত ৩ এপ্রিল রাতে মামলাটি করেন শান্তিরাম ইউনিয়নের উত্তর পরান গ্রামের মরহুম মুনসুর আলীর ছেলে মো: আইয়ুব আলী।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের সময় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সদস্যরা একত্রিত হয়ে ১৪ দলীয় মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে বিজয়ী করতে অবৈধভাবে তারা কেন্দ্রে প্রবেশ করে। এরপর ভোটারদের ভয় দেখিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা দেয়।
এ সময় জাতীয় পার্টির ইউনিয়ন সভাপতি শরিফুল ইসলাম শাহিনের নির্দেশে তারা অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে আইয়ুব আলীর ছেলে শাহিন মিয়া (৩২) নামের এক ভোটারকে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ শাহিনের বাম উরু ভেদ করে ডান পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। এতে শাহিন মিয়া গুরুতর আহত হন এবং রক্তক্ষরণের কারণে তাকে দ্রুত প্রথমে সুন্দরগঞ্জ হাসপাতাল এবং পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসায় প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা খরচ হলেও তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।
বর্তমানে শাহিন মিয়া স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেছেন। মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে দীর্ঘদিন মামলা করতে বিলম্ব হয়েছিল।
মামলার বাদি আইয়ুব আলী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়ে আমার ছেলেকে পঙ্গু করেছে। এতদিন সন্ত্রাসীদের চাপে মামলা করতে পারিনি। অবশেষে সাতবছর পর মামলা করেছি। আমি ন্যায় বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব এবং আশা করি, আইন সঠিক পথে ব্যবস্থা নেবে।
সুন্দরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে গুলি চালানোর ঘটনায় দীর্ঘ সময় পর মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর আছে এবং আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’