গাজীপুরের শ্রীপুরে মাদক উদ্ধার অভিযানকালে সড়ক অবরোধ করে র্যাবের গাড়ি আটক ও হামলার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে র্যাব। মামলায় একটি অস্ত্র আইনে এবং অপরটি সরকারি কাজে বাধা ও গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ করা হয়েছে। উভয় মামলায় দুই নারীসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত দেড় শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র্যাব সদর দফতরের ওয়ারেন্ট অফিসার জাফর ইকবাল ওই দুটি মামলা দায়ের করেন। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় আসামিরা হলেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বালিদিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে সাফুয়াত হোসেন (২৩), হালুযাঘাট উপজেলার নাগলা বাজার ইউনিয়নের আব্দুল জলিলের ছেলে মাহমুদুল হাসান (২৫), গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আরাফাত হোসেন আকিব (২৩), শ্রীপুর উপজেলার বরমী মধ্যপাড়া গ্রামের আলালের ছেলে সাব্বির হোসেন (২০), মৃত আজিজুল হকের ছেলে সফিজুল হক (২৮), মৃত আনছার রহমানের ছেলে মাসুদ (৪৮), আহম্মদ আলীর ছেলে মোফাজ্জল (২৭), রফিকের ছেলে মারুফ (১৮), শহিদুল্লাহর ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক (২৫), মৃত আরসক আলীর ছেলে সাহেব আলী (৫৫), সাগরের স্ত্রী আঞ্জুমান (২১), মোশারফ হোসেনের স্ত্রী স্মৃতি (২৮), পাশের কাওরাইদ গ্রামের আব্দুল গনি মিয়ার ছেলে শাহজাহান (৪২) এবং সিলেটের দোয়ারাবাজার উপজেলার গাজগড্য গ্রামের রূপ মিয়ার ছেলে সাগর (২৩)। তাদেরকে গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় গাজীপুর আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে সময় গোপন সংবাদে জানতে পারেন শ্রীপুর উপজেলার বরমী (বরামা চৌরাস্তা) এলাকায় অবৈধ মাদকদ্রব্যের বড় চালান ক্রয়-বিক্রয় হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে তাদের নির্দেশে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বরামা চৌরাস্তায় পৌঁছে মোশারফের অটো গ্যারেজে অভিযান চালায় র্যাব। পরে বরমী মধ্যপাড়া গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে মোশারফ হোসেন (৩৬) পালানোর চেষ্টা করলে তাকে একটি পিস্তলসহ গ্রেফতার করে। পরে গ্রেফতারকৃতের প্ররোচনা ও উস্কানিতে সকল আসামিরা দা, লাঠি, বল্লম, রামদা, লোহার রড, বাঁশের লাঠি নিয়ে আসামি মোশারফ হোসেনকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য র্যাবের গাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে শ্রীপুর-বরমী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা র্যাব কর্মকর্তা ও সদস্যদের মারপিট করে। আসামিদের মারধরে র্যাব সদর দফতরের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নূর আলম (৩৩), উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুব (৩১), র্যাব সদস্য সোহাগ হোসেন (২৮), গোলাম মোরশেদ (২৭), সোবহান আলী (৪০) শারীরিকভাবে আহত হয়। আহতরা শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে ১৪ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে গাজীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আট আসামিসহ বাকিদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’