শহীদ শাহরিয়ার শুভর লাশ উত্তোলনে পরিবারের আপত্তি, তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত

পরিবারের সদস্যরা লাশ উত্তোলনে অনাগ্রহ প্রকাশ করে লিখিত আপত্তিনামা দাখিল করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা গ্রহণ করে কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

হুসাইন মালিক, চুয়াডাঙ্গা

Location :

Chuadanga

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র গ্রামের শাহরিয়ার শুভর লাশ উত্তোলনে আপত্তি জানিয়েছে তার পরিবার। ঢাকা সিএমএম আদালতের নির্দেশে বুধবার (১২ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে লাশ উত্তোলনের কথা থাকলেও পরিবারের লিখিত আপত্তির পর সেটি স্থগিত করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা এ দিন শহীদ শাহরিয়ার শুভর গ্রামের সমাধিস্থলে উপস্থিত হন। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা লাশ উত্তোলনে অনাগ্রহ প্রকাশ করে লিখিত আপত্তিনামা দাখিল করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা গ্রহণ করে কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশফাকুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে লাশ উত্তোলনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তবে শহীদের পরিবার লাশ উত্তোলনে অনিচ্ছুক হওয়ায় আমরা তাদের আপত্তিনামা গ্রহণ করেছি। বিষয়টি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে আদালতে পাঠানো হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত আদালত নেবেন।’

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনে নিহত শাহরিয়ার শুভর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয়ে ঢাকা সিএমএম আদালত লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। মামলার সাথে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রোকনুজ্জামান বলেন, লাশ উত্তোলনের মাধ্যমে ময়নাতদন্ত করে মৃত্যুর সময় ও কারণ নিশ্চিত হওয়াই ছিল মূল উদ্দেশ্য।

২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হন শাহরিয়ার শুভ। পরে ২৩ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর নিজ গ্রাম শংকরচন্দ্রে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

শাহরিয়ার শুভ বাবা আবু সাঈদ বলেন, ‘আমার ছেলে কোটা আন্দোলনে শহীদ হয়েছে। আমরা চাই না তার দাফনস্থান আবার খোঁড়া হোক। এজন্য আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত আপত্তি জানিয়েছি।’

শুভর স্ত্রী রাজিয়া খাতুন বলেন, ‘১৬ মাস আগে আমরা যে কষ্ট পেয়েছি, আবার সেই কষ্টের পুনরাবৃত্তি চাই না।’

এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিবুল ইসলাম সুজন, সরোজগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম, ওয়ারিয়র্স অব জুলাই-এর আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাহফুজ হোসেন, সদস্য সচিব সলিমিন হোসেন সোহাগ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাসনা জাহান খুশবুসহ শহীদের পরিবারের সদস্য ও জেলা পুলিশের একটি টিম।