বুড়িচংয়ে জমি নিয়ে বিরোধে ২ লাখ টাকা চুক্তিতে প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তি

গ্রেফতার আসামিদের বুধবার দুপুরে কুমিল্লা আদালতে পাঠালে তারা হত্যার ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দী দেন। পরে তাদের কুমিল্লা জেল হাজতে পাঠানো হয়।

বুড়িচং (কুমিল্লা) সংবাদদাতা

Location :

Burichong
গ্রেফতার আনোয়ার, রুবেল ও মাইনুদ্দিন (বাঁ দিক থেকে)
গ্রেফতার আনোয়ার, রুবেল ও মাইনুদ্দিন (বাঁ দিক থেকে) |নয়া দিগন্ত

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে সেফটি ট্যাংক থেকে প্রবাসীর স্ত্রীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চার আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে তারা আদালতে হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

বুধবার (২ জুলাই) দুপুরে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বুড়িচং থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক।

গ্রেফতার আসামিরা হলেন- দক্ষিণগ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী নুরজাহান বেগম(৫০), একই গ্রামের মো: সোলাইমান ওরফে তনু মিয়ার ছেলে আনোয়ার(৩০), মমতাজ উদ্দিনের ছেলে রুবেল আহমেদ মিন্টু(৩১), খোরশেদ আলমের ছেলে মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন জিল্লু(২৭)।

ওসি মোহাম্মদ আজিজুল হক জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই লাখ টাকা চুক্তিতে খুন করা হয় ফেরদৌসী বেগমকে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে নিহতের ঝা সহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, রাজাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার সৌদি প্রবাসী শামসুল হক আলমের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম নয়ন ও ঝা নুরজাহান বেগমের মধ্যে বাড়ির পাশের একটি জমি নিয়ে পূর্ববিরোধ চলছিল। বিষয়টি নিয়ে কোনো প্রকার সুরহা না হওয়ায় ফেরদৌসী বেগমকে হত্যার পরিকল্পনা করে ঝা নুরজাহান বেগম।

পরিকল্পনা অনুযায়ী পাশের এলাকার মাদকসেবী আনোয়ার হোসেনের সাথে দুই লাখ টাকায় হত্যার চুক্তি করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী আনোয়ার হোসেন সাথে মমতাজ উদ্দিনের ছেলে রুবেল আহমেদ মিন্টু ও খোরশেদ আলমের ছেলে মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন জিল্লু এই দুজনকে যুক্ত করেন। চুক্তি অনুযায়ী গত ২৭ জুন শুক্রবার সকালে ফেরদৌসী বেগমকে বাড়ির পাশের একটি নির্জন বাগানে হত্যা করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়। ফেরদৌসী বেগম নিখোঁজের পর থেকেই পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজিসহ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

পরে মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে স্থানীয়রা বাড়ি থেকে দুই শ’ গজ দূরে একটি নির্জন বাগানের সেপটিক ট্যাংকে বস্তাবন্দী লাশের সন্ধান পেয়ে বুড়িচং থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে বুড়িচং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সেপটিক ট্যাংক থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে।

এই ঘটনার পর নিহতের ছেলে ইকরামুল হাসান বুড়িচং থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পর বুড়িচং থানা পুলিশ প্রথমে নিহতের ঝা নুরজাহান বেগমকে আটক করে। পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে একপর্যায়ে হত্যার ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেযন তিনি। পরে অভিযান চালিয়ে আরো তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় আসামিদের কাছ থেকে নিহতের কানের দুল, গলার চেইন উদ্ধার করা হয় বলেও জানান ওসি আজিজুল হক।

গ্রেফতারদের বুধবার দুপুরে কুমিল্লা আদালতে পাঠালে আসামিরা হত্যার ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দী দেন। পরে আসামিদের কুমিল্লা জেল হাজতে পাঠানো হয়।