কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি ও দেবিদ্বার (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত মাহতাবের বাড়িতে এসে স্বজনদের সাথে দেখা করেছেন বিমান বাহিনীর প্রতিনিধি দল।
রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে মাহতাবের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের চুলাশ গ্রামে আসেন তারা।
বিমান বাহিনী প্রধানের পক্ষ থেকে আসা প্রতিনিধি দল নিহত মো: মাহতাব রহমান ভুইয়ার কবরে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার মো: আতিক হাসান পিএসসি, মাহতাবের বাবা মো: মিনহাজুর রহমান ভুইয়া।
উইং কমান্ডার আতিক হাসান বলেন, ‘বিমান বাহিনী ও বিমান বাহিনীর প্রধানের পক্ষ থেকে প্রয়াত মাহাতাবের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়েছে। আমরা শোকাহত। সারাদেশবাসী দোয়া করছি যেন এই শোক কাটিয়ে উঠতে পারি। যারা আহত আছেন তারাও যেন দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে পরে আমরা দোয়া করছি।
মাইলস্টোন ট্রাজেডির তদন্তের বিষয়ে উইং কমান্ডার আতিক হাসান জানান, তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং নিহত ও আহতদের পরিবারকে যে সহযোগিতা করা হচ্ছে তা আইএসপিআর এর মাধ্যমে জানানো হবে।
মাহতাবের বাবা মো: মিনহাজুর রহমান ভুইয়া বলেন, ‘সারদেশের মানুষ আমার সন্তনের জন্য দোয়া করেছে আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি চাই আমার ছেলে যেন শহীদের মর্যাদা পায়-এই দোয়া করি।’
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল ছুটির আগ মুহূর্তে স্কুলের ভবনে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে অনেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক হতাহত হন। এ ঘটনায় সপ্তম শ্রেণির মাহতাব রহমান ভূঁইয়া গুরুতর আহত হয়। দুর্ঘটনায় তার শরীরের প্রায় ৭৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। পরে সেনাবাহিনী উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চতুর্থ তলার আইসিইউতে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) মাহতাবের মৃত্যু হয়। ওইদিন রাতেই দেবিদ্বারের চুলাশ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
চিকিৎসাধীন মাহতাব বাবাকে বলেছিল ‘বাবা আমার জন্য টেনশন করো না, আমি সুস্থ হয়ে যাব ইনশাআল্লাহ’
মাহতাবের বাবা মিনহাজুর রহমার ভূঁইয়া জানান, মৃত্যুর আগে আমার সোনা মানিক আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিল, ‘বাবা আমার জন্য টেনশন করো না, আমি সুস্থ হয়ে যাব ইনশাল্লাহ।’
মাহতাব রহমান ভূঁইয়া কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার চুলাশ গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির মিনহাজুর রহমার ভূঁইয়া ও লিপি আক্তার দম্পতির একমাত্র ছেলে। মাহতাব ৩ ভাই বোনের মধ্যে দ্বিতীয় ছিল। তার বড় বোন নাবিলা একই স্কুলের দশম শেণির ছাত্রী এবং ছোট বোন নাইসার বয়স ৩ বছর। তারা ঢাকার উত্তরায় একটি বাসায় থাকতেন।