কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার খামারিরা গরু মোটাতাজাকরণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে দেশীয় খাবার খাইয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে কোরবানিযোগ্য গরু। যদিও পশু খাদ্যের দাম বেড়েছে, তবুও ভালো লাভের আশা করছেন খামারিরা। পাশাপাশি, ভারতীয় গরুর আমদানিকে কেন্দ্র করে রয়েছে তাদের বাড়তি উদ্বেগ।
খামারিরা মনে করছেন, ভারতীয় গরুর আমদানি বন্ধ হলে দেশীয় গরুর চাহিদা ও দাম উভয়ই বাড়বে, যা তাদের জন্য লাভজনক হবে।
এদিকে কেমিক্যাল ব্যবহার করে গরু মোটাতাজাকরণ যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রাণিসম্পদ দফতর নিয়মিত মনিটরিং করছে।
উপজেলার পৌর এলাকা, উচাখিলা ও রাজীবপুরের বিভিন্ন এলাকার খামারে সরেজমিনে দেখা গেছে, কোরবানির বাজারকে ঘিরে খামারিরা গরুর পরিচর্যা ও প্রাকৃতিক খাদ্য যেমন- খৈল, কুটা, ঘাস ও দানাদার খাদ্য দিয়ে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিবারের মতো এবারও স্থানীয় বাজার ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় গরু বিক্রির আশায় খামারিরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
খামারি আরিফ হোসেন সায়মন জানান, ‘দেশীয় খাবার দিয়েই গরু মোটাতাজা করছি। প্রতিটি গরু এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা দামের মধ্যে। এখানে কোনো ধরনের কৃত্রিম মেডিসিন ব্যবহার করা হয়নি। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাদ্য ও নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় গরুগুলো লালন করা হয়েছে।’
উপজেলার উচাখিলা চরআলগী এলাকার ফিরোজ ডেইরি ফার্মে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ১৫টি ষাঁড়। এর মধ্যে ইতোমধ্যে সাতটি গরু বিক্রি হয়ে গেছে।
ফার্মের মালিক ফিরোজ জানান, ‘বর্তমানে আমার খামারে আটটি গরু রয়েছে, যেগুলোর দাম তিন লাখ থেকে শুরু করে আট থেকে নয় লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। বড় দু’টি গরুর ওজন ৬০০ কেজিরও বেশি।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বলেন, গরুর হাট ও খামারে আমাদের মনিটরিং টিম কাজ করছে। এবারের ঈদেও প্রতিটি পশুর হাটে ভেটেনারি টিম বসানো হবে, যাতে কেউ কেমিক্যাল ব্যবহার বা রোগাক্রান্ত গরু বিক্রি করতে না পারেন।
তিনি আরো বলেন, এ বছর উপজেলায় কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত রয়েছে ১৩ হাজার ৩৯৭টি। যেখানে চাহিদা রয়েছে ৯ হাজার ৮৫০টি পশুর। সরাসরি হাটের পাশাপাশি অনলাইনেও গরু ও ছাগল বিক্রির জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।