শফিকুল ইসলাম মাসুদ, পিরোজপুর
উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরে নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হালকা দমকা বাতাস, উত্তরাঞ্চলের ঢলে নেমে আসা পানি এবং অমাবস্যার প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ার ও টানা বর্ষণের ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে জেলার অন্তত সাতটি উপজেলার শতাধিক গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) থেকে শুরু হয়ে সোমবার দুপুর পর্যন্ত বলেশ্বর, কঁচা, কালিগঙ্গা ও সন্ধ্যা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো জোয়ারের অতিরিক্ত পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
পিরোজপুর সদর উপজেলার কুমিরম্রা দেওনাখালী বানেশ্বরপুর অধিকাংশ রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ির উঠানে পানি উঠছে। এছাড়াও জেলার ইন্দুরকানী, কাউখালী, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
এর প্রভাব পড়েছে রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ, মাছের ঘের, বসতবাড়ির আঙিনা, বাগান ও সবজিক্ষেতে।
হুলারহাটের স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুল হক স্থানীয় জানিয়েছেন, সিডর, আয়লা ও রেমাল ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তের পর অধিকাংশ বেড়িবাঁধ মেরামত না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি ও জোয়ারে নদীর পানি সহজেই লোকালয়ে প্রবেশ করছে। স্রোতের চাপে অনেক জায়গায় রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে এবং প্রতিদিনের যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়ছে।
পাড়েরহাট নদীপাড়ের বাসিন্দা আকিমুল বেগম বলেন, ‘সামান্য জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় আমার বাড়িঘর জরুরি কোনো কাজে জোয়ার থাকা অবস্থায় বের হতে পারি না। এ বৃদ্ধ বয়সে আমার রান্নাবাড়া করতে অনেক কষ্ট হয়।’
নদীর উপকূলবর্তী এলাকার মানুষের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। ভোগান্তির শিকার হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ও কর্মস্থলে যাওয়া মানুষজন। প্রয়োজনীয় সংস্কার ও উন্নয়নের অভাবে দিন দিন পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে।
পিরোজপুর জেলা প্রশাসক আশরাফুল আলম খান বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করে পরবর্তী সময় তাদের সার্বিক সাহায্য করা হবে এবং বাধ নির্মাণের জন্য আমরা আবেদন করছি বরাদ্দ হলে আমরা কাজ শুরু করব।’