জকিগঞ্জে বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজে বিএসএফের বাধা

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত কাপনা এলাকায় বেড়িবাঁধের মেরামত কাজ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার বাধার মুখে পড়েন।

জকিগঞ্জ (সিলেট) সংবাদদাতা

Location :

Sylhet
জকিগঞ্জে বেড়িবাঁধ নির্মাণে বাধা দিয়েছে বিএসএফ
জকিগঞ্জে বেড়িবাঁধ নির্মাণে বাধা দিয়েছে বিএসএফ |নয়া দিগন্ত

সিলেটের জকিগঞ্জে বিগত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কুশিয়ারা নদীর বেড়িবাঁধে (ডাইক) জরুরি মেরামতের কাজ করতে গেলে বাধা দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী- বিএসএফ।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত কাপনা এলাকায় বেড়িবাঁধের মেরামত কাজ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার বাধার মুখে পড়েন।

ঠিকাদার নুরুল আমীন বলেন, ‘আমার লোকজন বেড়িবাঁধের জরুরি মেরামত কাজ করতে গিয়ে বারবার ভারতীয় বিএসএফের বাধার মুখোমুখি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা প্রয়োজনীয় মালামাল ও যন্ত্রপাতি নিয়ে বাঁধ মেরামত করতে গেলে বিএসএফ সরাসরি বাধা দেয়। দুই দিন আগে এখানে আমার লোকজন কাজ করতে গেলে বিএসএফ মারমুখী হয়ে উঠে। পরে বিজিবি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পুনরায় কাজ করতে গেলে আজ ভারতীয় বিএসএফ এসে আবারো বাধা দেয়। বিজিবি ও বিএসএফ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে কাজের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত জানাবে বলে জানিয়েছে।’

বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে স্থানীয় বিজিবি লোহারমহল ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েক সুবেদার মো: সিরাজুল ইসলাম জানান, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজের মধ্যে কোনো দেশ বেড়া কিংবা স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধটি সীমান্তের ১৫০ গজের ভিতরে হওয়ায় ভারতীয় বিএসএফ বাধা দিয়েছে। বাংলাদেশের নদী ভাঙন ও বন্যা সমস্যার বিষয়টি বিজিবি ভারতীয় বিএসএফকে অবহিত করলে তারা জানায়, ২০২০-২১ ও ২২ সালে বাংলাদেশের কাজ করার অনুমতি ছিল। এখন আর সেই সুযোগ নেই। এখন কাজ করতে হলে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করে অনুমতি নিয়ে কাজ করতে হবে।

এ বিষয়ে জকিগঞ্জ উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: মাহফুজুর রহমান ভূইয়া বলেন, ‘জকিগঞ্জ সীমান্তের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ মেরামত কাজ করতে গিয়ে বারবার ভারতীয় বিএসএফের বাধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বাঁধ নির্মাণ নয়, বাঁধ মেরামত কাজেও ওরা বাধা দিচ্ছে। এতে ঠিকাদারসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা বিষয়টি একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।’

এদিকে দ্রুত বাঁধ মেরামত না করলে বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে বর্ষা মৌসুমে লোকালয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্রতিবছরের মতো আগামীতেও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। এছাড়া বেড়িবাঁধটি স্থানীয়রা চলাচলের রাস্তা হিসেবেও ব্যবহার করে থাকেন। তাই বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করে বেড়িবাঁধ মেরামত করার দাবি জানান এলাকাবাসী।