সিলেটে সিআইডি কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাত : ‘ছাত্রলীগ নেতা’ আটক

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে নগরের সাগরদীঘিরপাড় এলাকায় ছুরিকাঘাতের ওই ঘটনার পর মঙ্গলবার ভোরে তাকে আটক করে পুলিশ ও সিআইডির যৌথ দল।

এমজেএইচ জামিল, সিলেট ব্যুরো

Location :

Sylhet Sadar
রহিম উদ্দিন রাজুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ
রহিম উদ্দিন রাজুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ |নয়া দিগন্ত

সিলেট নগরীতে আসামি ধরতে গিয়ে সিআইডি কর্মকর্তা ছুরিকাঘাতের শিকার হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত রহিম উদ্দিন রাজুকে (৩৩) গ্রেফতার করা হয়েছে।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে নগরের সাগরদীঘিরপাড় এলাকায় ছুরিকাঘাতের ওই ঘটনার পর মঙ্গলবার ভোরে তাকে আটক করে পুলিশ ও সিআইডির যৌথ দল।

রাজু সাইবার মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি এবং তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত বলে জানিয়েছে পুলিশের।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সিআইডি ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

এসএমপি সূত্র জানিয়েছে, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তি নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা। মঙ্গলবার ভোরেই অভিযুক্ত রহিম উদ্দিন রাজুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের সময় তার সাথে ‘ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য’ লেখা একটি ভিজিটিং কার্ড উদ্ধারের কথা জানিয়ে পুলিশ বলছে, কার্ডটির ব্যাপারে যাছাই বাছাই চলছে।

পুলিশ জানায়, সাদাপোশাকে সিআইডি পুলিশের অভিযানের সময় রাজু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তাকে আটক করতে এগিয়ে গেলে তিনি ধারালো একটি ছুরি দিয়ে সিআইডি কর্মকর্তা খোরশেদ আলমকে আঘাত করে দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে আহত কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই রাতে তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে এবং তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এদিকে, ঘটনার পরপরই পুলিশ ও সিআইডির একাধিক দল বিশেষ অভিযান শুরু করে। মঙ্গলবার ভোররাতে এয়ারপোর্ট থানার মজুমদারী এলাকার একটি মেসে অভিযান চালিয়ে রাজুকে আটক করা হয়।

আটককৃত রাজু সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার পশ্চিম কোনাগ্রাম এলাকার রফিক উদ্দিনের ছেলে। তিনি বর্তমানে সিলেট নগরীর শাপলাবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন।

পুলিশ জানায়, আটককৃত ব্যক্তির দেহ তল্লাশিতে তার কাছে একটি ভিজিটিং কার্ড পাওয়া যায়, যেখানে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য হিসেবে তার পরিচয় উল্লেখ রয়েছে।

এ ব্যাপারে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির ডিআইজি ড. মো: আল মামুনুর আনসারী জানান, আটককৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পূর্বে বিভিন্ন থানায় মোট ছয়টি মামলা রয়েছে—যার মধ্যে কোতোয়ালী থানায় একাধিক এবং শাহপরাণ থানায় চুরি ও মারপিট সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। এছাড়া পূর্বের এক মামলার বাদির ছবি সম্পাদনা করে অসদুপায় অবলম্বন এবং হয়রানির অভিযোগেও সে অভিযুক্ত।

তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের ওপর এ ধরনের হামলা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাজু মোটরসাইকেলে ওঠার সময় সিআইডির সদস্যরা তাকে আটক করার চেষ্টা করলে তিনি পকেট থেকে ছুরি বের করে সিআইডির উপপরিদর্শক খোরশেদ আলমকে আঘাত করে দৌড়ে পালিয়ে গিয়ে পুনরায় মোটরসাইকেলে উঠে এলাকা ত্যাগ করেন।

এর সত্যতা নিশ্চিত করে এসএমপির কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি খান মোহাম্মদ মাইনুল জাকির বলেন, সিআইডি কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় জড়িত যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, আটককৃতকে মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।