বাগেরহাটে ৪টি আসনের দাবিতে হরতাল, বন্ধ দূরপাল্লার বাস চলাচল

নির্বাচন কমিশনের অন্যায্য সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করা হচ্ছে। জনগণের স্বার্থ রক্ষার আন্দোলনেই আমরা এই কর্মসূচি দিয়েছি।

রবিউল ইসলাম, বাগেরহাট

Location :

Bagerhat
বাগেরহাটে ৪টি আসনের দাবিতে হরতাল
বাগেরহাটে ৪টি আসনের দাবিতে হরতাল |নয়া দিগন্ত

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন পুনঃবহালের দাবিতে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল থেকে জেলার ১৬টি রুটে দূরপাল্লার কোনো পরিবহন ছেড়ে যায়নি। ফলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ১০ জেলার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। জরুরি প্রয়োজনে যাত্রীরা বিকল্প পথে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে চলাচল করছেন।

এদিন সকাল ৭টার পর শহরের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, দশানী মোড়, খান জাহান আলী (রহ.) মাজার মোড়, মুনিগঞ্জ সেতু ও দরটানা টোল প্লাজা ঘুরে দেখা গেছে, দূরপাল্লার বাস চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। তবে শহরে সীমিত আকারে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, রিকশা ও ভ্যান চলতে দেখা গেছে।

গতকাল রোববার সকালে সর্বদলীয় নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করে পাঁচ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর অংশ হিসেবে আজ সোমবার হরতাল, আগামীকাল মঙ্গলবার জেলাব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল এবং বুধবার ও বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়া হয়। ঘোষিত কর্মসূচির আওতায় আজ সোমবার সকাল থেকে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। শহরের বেশিভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান ফটকে সর্বদলীয় নেতৃবৃন্দ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে অফিসে প্রবেশে বাধা দেন।

যাত্রী ফারুক হোসেন বলেন, ‘জরুরি কাজে ঢাকায় যেতে হচ্ছে, কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় যেতে পারছি না। বিকল্প পথে তিন-চার গুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। হরতালে সাধারণ মানুষই বেশি ভোগান্তিতে পড়ে।’

বাগেরহাট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের অন্যায্য সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করা হচ্ছে। জনগণের স্বার্থ রক্ষার আন্দোলনেই আমরা এই কর্মসূচি দিয়েছি।’

হরতাল সমর্থনকারী নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে জেলা নির্বাচন অফিসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে জেলা প্রশাসক ও জজ কোর্টের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে বিএনপি, জামায়াত ইসলামী, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এনসিপির নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

জেলা নির্বাচন অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জজ আদালতসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনে জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করে আসছে। এখান থেকে চারজন এমপি নির্বাচিত হন। বর্তমান সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের কারিগরি টিম জনসংখ্যার ভিত্তিতে চারটি আসন কমিয়ে তিনটি করা হয়। এক উপজেলা থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকা সত্ত্বেও তা অন্য উপজেলার সাথে যুক্ত করে আসন ঘোষণা করা হয়। গণশুনানি ছাড়াই নেয়া এ সিদ্ধান্তে বাগেরহাটের সাধারণ জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। দ্রুত চারটি আসন পুনঃঘোষণার দাবিতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বাগেরহাটবাসী।