চট্টগ্রামের গুপ্তখালস্থ পদ্মা অয়েল কোম্পানির প্রধান স্থাপনা (এমআই) থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জেট ফুয়েল পাঠানো শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে জেট এ-১ পাইপলাইন, চট্টগ্রাম প্রকল্পের উদ্বোধন করেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের(বিপিসি) চেয়ারম্যান মো: আমিন উল আহসান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হকের অ্যায়ার অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল হায়দার আবদুল্লাহ, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পরিচালক (অপা. ও পরি.) ড. এ কে এম আজাদুর রহমান এবং শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আবদুল্লাহ আলমগীর।
বক্তব্য রাখেন পদ্মা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: মফিজুর রহমান ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী অমিত কুমার বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে দোয়া ও মোনাজাত করেন মুফতি আবদুর রাজ্জাক।
সূত্র জানায়, গুপ্তখালে পদ্মার প্রধান স্থাপনা(এমআই) থেকে ট্যাংকলরি যোগে ৮ কিলোমিটার দূরে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের অ্যাভিয়েশন ডিপোতে জেট এ-১ সরবরাহ করা হতো। এ বিমানবন্দরের চাহিদা দৈনিক ২ লাখ ২৫ হাজার লিটার, বছরে ৬৫ হাজার টন। ট্যাংকলরিতে এ জ্বালানি তেল পরিবহনে খরচ হতো বছরে ৮ কোটি টাকা। ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে ৮ ইঞ্চি ব্যাসের অভ্যন্তরীণ ইপক্সি কোট ও বাহ্যিক থ্রি এলপিই কোট সম্বলিত ন্যূনতম দেড় মিটার আন্ডারগ্রাউন্ড পাইপলাইনে ঘণ্টায় ১ লাখ ৪০ হাজার লিটার জ্বালানি পরিবাহিত হচ্ছে। ৩০ বছর মেয়াদি এ প্রকল্প স্ক্যাডা পরিচালিত কন্ট্রোল ও অটোমেশন সিস্টেমে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।
পদ্মা অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, ‘জেট এ-১ পাইপ লাইন প্রকল্পটি একটি আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর জাতীয় স্বার্থ এবং পরিবেশ বান্ধব প্রকল্প। এই প্রকল্প শুধু বিমান বন্দরের জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করবেনা, পাশাপাশি বিমান বাহিনীর জহুরুল হক ঘাটিতে জেট এ-১ এর নিরাপদ মজুদ গড়তেও সাহায্য করবে।’
প্রধান অতিথি জ্বালানি সচিব সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এটি শুধু একটি পাইপ লাইন প্রকল্প নয়, এটি একটি জাতির গর্ব। আমরা ম্যানুয়াল পদ্ধতি থেকে প্রযুক্তিগত পদ্ধতিতে প্রবেশ করছি। এটা শুরু আমাদের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে তা নয়, এটি আমাদের দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বিমান বাহিনীর জহুরুল হক ঘাটিতে জ্বালানি স্টোরেজের মাধ্যমে। এটি ৩০ বছর ধরে নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করবে, যা নি:সন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক।’
তিনি জানান, আগামী এক বছরের ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরেও পাইপ লাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হবে। ওই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
প্রকল্প ব্যয় নির্ধারিত ১৭০ কোটি টাকার স্থলে ১৬০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে এবং বাস্তবায়নকাল আগামী ডিসেম্বরের আগেই কাজ শেষ হওয়ায় তিনি সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।