নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক ভিসা প্রতারকের বাড়িতে গিয়ে নিজেদের ডিবি পরিচয়দানকারী দু’জনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয় জনতা।
শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেল ৩টায় উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া অচিনা ডাংগা এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের মো: আশরাফ আলীর ছেলে মো: দুলাল হোসেন (৪৬) ও নীলফামারী সদর উপজেলার দাড়োয়ানী মোল্লাপাড়া এলাকার মরহুম ইনসানের ছেলে মো: ফারুক হোসেন (৪৫)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দিন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আটক হওয়া দু’জন ওই এলাকার বাগিচাপাড়ার মরহুম ইলিয়াস আলীর ছেলে তারিকুল ইসলামের কাছ থেকে ডিবি পরিচয় টাকা দাবি করলে তিনি কৌশলে তাদের তার বড় ভাই ভুট্টা অচিনের ডাঙা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে পৌঁছে ভুয়া ডিবি বলে চিৎকার করে। এতে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাদের আটক করেন।
পরে ৯৯৯ নম্বরে খবর পেয়ে এস আই হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দু’জনকে আটক করে সৈয়দপুর থানায় নিয়ে আসে। একটা সূত্রমতে তারিকুলের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যক্তির ভিসা প্রতারণা করে ছয় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আটক দুলাল ইতোপূর্বেও সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ডিবিতে অভিযোগ থাকার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিশেষ করে ভিসা প্রতারণার সাথে জড়িতদের মামলা ও আটকের ভয় দেখিয়ে এ কাজ করে আসছে। তিনি নিজেকে ডিবি পুলিশের সোর্স পরিচয় দেন।
একইভাবে তারা তারিকুল ইসলামের কাছে এসেছিল। তাদের অভিযোগ তারিকুল ইসলামও একজন ভিসা প্রতারক। তাই তার কাছে দু’ লাখ টাকা দাবি করে দুলাল। শেষে ৬০ হাজার টাকা দিতে চেয়ে দুলালকে ডেকে এনে ফাঁসিয়েছে। জনতার হাতে আটকের পর দুলাল বারবার নীলফামারী ডিবি অফিসের এসআই জাকির হোসেনের সাথে মুঠোফোন কথা বলতে বলেন। তার তথ্যের ভিত্তিতে এখানে এসেছে বলেও জানান।
তারিকুল ইসলাম ভিসা প্রতারণার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আটক দুলালকে আমরা আগে থেকেই চিনি। তিনি গত এক সপ্তাহ আগে এসে তার মোবাইলে আমার ছবি, আমার মেয়ের ছবি, আমাদের ভোটার আইডি কার্ডের ছবি দেখিয়ে বলে আমার নামে মামলা হয়েছে। ডিবি অফিস থেকে এগুলো সংগ্রহ করেছে। দু’ লাখ টাকা দিলে তিনি ডিবির মামলা থেকে আমার নাম কেটে দেবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি যেহেতু কোনো ভিসা প্রতারণার সাথে জড়িত নই, তাই মনে হয়েছে দুলাল আমার সাথে প্রতারণা করছে। এ কারণে আজকে যখন আবার এসেছে তাকে আটকে ফেলেছি।’
নীলফামারী ডিবি অফিসের এসআই জাকির হোসেন বলেন, ‘দুলাল সোর্স হিসেবে কাজ করার জন্য অনেকবার বলেছে। কিন্তু আমি পাত্তা দেইনি। তবে সে আমার নাম করে কোথাও কোনো অপকর্ম করলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আসতে হবে। আমার বিরুদ্ধে অর্থ নেয়া বা এ ধরনের কোনো অভিযোগ সঠিক নয়।’
এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ফইম উদ্দিন বলেন, ‘বাদীর ভাষ্য অনুযায়ী আটক দুলাল ডিবি অফিসের সাথে পরিচয়ের কথা বললেও নিজেকে ডিবি পুলিশ হিসেবে পরিচয় দিয়েছে কি না তা এখনো নিশ্চিত নই। তবে দু’জনকেই জিজ্ঞেসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’