কলাপাড়ায় বেড়িবাঁধ ভাঙনের শঙ্কা : আতঙ্কে হাজারো মানুষ

জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হলেও এর প্রায় ৯০ শতাংশই ভেসে গেছে। গত এক মাস ধরে টানা বৃষ্টি ও নিম্নচাপের প্রভাবে নদীর ভাঙন আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে।

মিজানুর রহমান, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী)

Location :

Patuakhali
নয়া দিগন্ত

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চর বালিয়াতলী গ্রামে বেড়িবাঁধ ভাঙনের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন হাজারো মানুষ। নদী ভাঙনে ইতোমধ্যে রিভার সাইটসহ মূল বাঁধের প্রায় ৯০ শতাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে পুরো এলাকাজুড়ে দেখা দিয়েছে প্লাবন আতঙ্ক।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় প্রতিদিনই বাঁধ ভেঙে যাওয়ার শঙ্কায় কাটছে তাদের সময়। যেকোনো মুহূর্তে নদীর পানি ঢুকে গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। এতে বসতবাড়ি, কৃষিজমি, আমন ধানের ক্ষেত, এমনকি গবাদিপশুও ঝুঁকিতে রয়েছে।

চর বালিয়াতলী গ্রামের বাসিন্দা মো: হাবিব বিশ্বাস, মো: জামাল হোসেন ও আবু সরদার বলেন, ‘রাতে ঘুম আসে না। ভয় লাগে, হঠাৎ করে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। শুধু ঘরবাড়িই নয়, আমাদের কৃষিজমি, গবাদিপশু এবং সন্তানদের ভবিষ্যৎও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছে না শিশুরা। অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা যেন একেবারেই অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছি।’

স্থানীয়দের দাবি, সাময়িক মেরামতের পরিবর্তে দ্রুত স্থায়ী ও টেকসই বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। তারা জানান, জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হলেও এর প্রায় ৯০ শতাংশই ভেসে গেছে। গত এক মাস ধরে টানা বৃষ্টি ও নিম্নচাপের প্রভাবে নদীর ভাঙন আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে।

এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শাহআলম ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রাকৃতিক কারণে নদীর পশ্চিম তীর ভাঙনপ্রবণ। করমজাতলায় মেরামত করা হলেও তা টেকেনি। দেবপুর ও গৈয়াতলায় মেরামতের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। চর বালিয়াতলীতে নতুন ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে। এছাড়া স্লুইসগেট বন্ধ করে জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

গ্রামবাসীর প্রত্যাশা এখন একটাই- দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে তাদের জীবন-জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।