বেড়িবাঁধের ১৩ কিলোমিটার জুড়ে দখল

আনোয়ারায় পাউবোর ৬০ একর দখলদারমুক্ত করবে প্রশাসন

‘বাঁধে কোনো ধরনের স্থায়ী বা অস্থায়ী অবৈধ স্থাপনা চলবে না। সকলকে নোটিশ ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। আইনিব্যবস্থা নিতে আমরা প্রস্তুত।’

মো: নূরুল কবির, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)

Location :

Anwara
আনোয়ারা বেড়িবাঁধ
আনোয়ারা বেড়িবাঁধ |নয়া দিগন্ত

আনোয়ারা উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মালিকানাধীন উপকূলীয় বাঁধ এলাকায় প্রভাবশালীদের দখলে থাকা প্রায় ৬০ একর জায়গা উদ্ধার করতে আগস্ট মাসেই উচ্ছেদ অভিযান চালাবে প্রশাসন।

ইতোমধ্যে মাইকিং করে অবৈধ দখলদারদের সরে যেতে সতর্ক করা হয়েছে। টানেল ও পারকি সমুদ্র সৈকত ঘিরে পর্যটক বাড়তে থাকায় বেড়িবাঁধ খেকো চক্রটি হোটেল, কটেজ, দোকান নির্মাণের নামে নির্বিচারে দখলে মেতেছে সংঘবদ্ধ চক্রটি। কোথাও মসজিদ বানিয়ে সরকারি জায়গা হাতিয়ে নেয়ার কারবারও চলছে। স্থানীয়রা অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের পাশাপাশি বাস্তুহারাদের সঠিক তালিকা নির্ণয় করে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের আশ্রায়ণ প্রকল্পে পুনর্বাসনের দাবিও জানানো হয়।

পাউবোর চট্টগ্রাম অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে শাহীদ জানান, উপকূলীয় বেড়িবাঁধে টেকসই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবৈধ স্থাপনা ছাড়াই এলাকা পরিষ্কার রাখতে হবে। এজন্য ২০ জুলাই থেকে মাইকিং করে স্থানীয়দের অবহিত করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদন মিললেই অভিযান শুরু হবে।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধটি শাহাদাত নগর থেকে বার আউলিয়া ঘাট পর্যন্ত বিস্তৃত, যার দু’পাশের এলাকা দখল করে বসতঘর, দোকান, মাছের ঘের, পার্কিং স্পট গড়ে তুলেছে স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালী গোষ্ঠী। পারকি, সিইউএফএল, পরুয়াপাড়া ও গহিরা এলাকায় এসব অবৈধ স্থাপনার কারণে বাঁধের স্থায়িত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পারকিসৈকত এলাকায় গাড়ি পার্কিং থেকে চাঁদা আদায়, মাছের ঘের ভাড়া দিয়ে টাকা আয় এবং চলাচলের পথ দখলে রাখায় বাঁধের ওপর দিয়ে চলাচল করা প্রায় ৫০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়ছে।

পরুয়া পাড়ার বাসিন্দা নুরুল হক বলেন, ‘বাঁধে অবৈধ স্থাপনার কারণে আমরা প্রতিদিন সমস্যায় পড়ি। কোটি টাকা খরচ করেও এর সুফল পাচ্ছি না। এখনো উচ্ছেদ শুরু না হওয়ায় প্রভাবশালীরা সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে উচ্ছেদ ঠেকাতে মরিয়া।’

পাউবো বলছে, ‘বাঁধটি উপকূল রক্ষা এবং ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রভাবশালীদের দখলদারির কারণে সরকার কোটি কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করেও জনগণের উপকার করতে পারছে না।’

নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে শাহীদ বলেন, ‘বাঁধে কোনো ধরনের স্থায়ী বা অস্থায়ী অবৈধ স্থাপনা চলবে না। সকলকে নোটিশ ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। আইনিব্যবস্থা নিতে আমরা প্রস্তুত।’

এ বিষয়ে আগস্ট মাসের শুরুতেই আনুষ্ঠানিকভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সব অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।