কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে গণঅধিকার পরিষদ মনোনীত প্রার্থী দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে চরপুমদী বাজারে গণসংযোগ করেন। গণসংযোগে দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
গণসংযোগ শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, গণঅধিকার পরিষদের ২০২১ সালে যাত্রার পরেই আমরা বলেছিলাম যে, আমরা ৩০০ আসনে নির্বাচন করবো এবং সেই লক্ষে আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আপনারা জানেন যে বিগত সময় শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী আমলেও আমরা গণঅধিকার পরিষদ রাজপথে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছি। আমাদের কিশোরগঞ্জেও যারা নেতৃবৃন্দ ছিল, তারাও কিন্তু সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে অনেক রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অনেক ধরনের অভিযোগ ছিল—কারো চাঁদাবাজি, কারো দখলদারি, কারো নানান ধরনের সরকারি অফিস-আদালত দখল, কিন্তু গণঅধিকার পরিষদ এক মাত্র রাজনৈতিক দল, যেই দলের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নাই। আমরা মানুষের কাছে এই বার্তা টুকু দিতে চাই, যাতে গণঅধিকার পরিষদ একটি ক্লিন ইমেজের রাজনৈতিক দল। এই দলকে আগামীতে নির্বাচনে ভোট দিলে এই দলের নেতারা সংসদে গেলে জনগণের জন্য কাজ করবে, কখনো লুটপাট করবে না, দুর্নীতি করবে না, চাঁদাবাজি করবে না। আজকে গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে ট্রাক প্রতীকে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে এই চরপুমদি বাজারে আমরা গণসংযোগ করেছি। এখানে জনগণের ভালো সাড়া পেয়েছি। জনগণ মানুষ পরিবর্তন চায়। কারণ বিগত সময় যাদেরকে মানুষ ভোট দিয়েছে, তারাই মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে। যে দল ক্ষমতায় গেছে তখন তারা লুটপাট, চাঁদাবাজি, দখলদারি কিংবা অর্থ পাচার করেছে। সুতরাং মানুষও চায় যেন তরুণদেরকে এবং নতুন নেতৃত্বকে আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে। ইনশাআল্লাহ আশা করি যে, আগামী তে যদি নির্বাচন সুষ্ঠু হয় এবং মানুষ ভোট দিতে পারে, আমাদেরকে বেছে নেবে।’
পাশাপাশি আরেকটি বিষয় বলে শেষ করতে চাই, যেহেতু আপনারা জানেন যে আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বলেছিলাম যে, আওয়ামী লীগ যেহেতু গণহত্যার জড়িত ছিল, তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। পাশাপাশি এই আওয়ামী লীগের সাথে যারা ছিল, বিশেষ করে জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দল, তাদেরকেও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। কিন্তু আমরা গত দু'দিন যাবত জাতীয় পার্টির এবং আওয়ামী লীগের দোসরদের যে অপতৎপরতা দেখতে পাচ্ছি, তারা জোটের নামে মূলত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের যে প্রকল্প নিয়েছে, তারা নতুন করে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এক ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। আশা করি এই তরুণদের নেতৃত্বে আমরা এই আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলকে কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দিব না। তারা যে জোটের নামে যে ধরনের আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করেছে, সেটা কখনো সফল হতে দিবে না।জোটের নামে জাপার আওয়ামী দোসরদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা সফল হতে দেব না।’
আরেকটি বিষয় আপনাদেরকে বলতে চাই, আমরা যেহেতু এই তরুণদেরকে সাথে নিয়ে কাজ করি, আমরা সবসময় অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছি, এখনও করছি। আমরা দেখেছি যে কিশোরগঞ্জের সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে এখানকার যে চিকিৎসা ব্যবস্থা, বিশেষ করে সৈয়দ নজরুল মেডিক্যাল। এইখানে আমরা প্রতিনিয়ত নানান ধরনের অন্যায়, অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ শুনি এবং বিশেষ করে চিকিৎসক এবং কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে আমরা বিভিন্ন সময় শুনি যে রোগী মারা যায় বা রোগীর স্বজন নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়। আমরা গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে আমাদের কিশোরগঞ্জবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারা আমাদের সাথে থাকুন। আমরা এই কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল মেডিকেল কলেজকে আমরা এমনভাবে সাজাতে চাই, যাতে করে জনগণ সবচেয়ে সহজ এবং দ্রুত গতিতে তারা যেন চিকিৎসা নিতে পারে। পাশাপাশি এখানে যারা সিন্ডিকেট করে নানাভাবে যারা মানুষকে হয়রানি করছে, ইনশাআল্লাহ আমরা এই ধরনের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিব। এখানকার শুধু কর্তৃপক্ষ না, আমরা জানি যে এখানকার নানান ধরনের মহল জড়িত রয়েছে। বিশেষ করে স্থানীয় রাজনীতিবিদদের ছত্রছায়ায় কিন্তু এই হাসপাতাল বিভিন্ন ধরনের অব্যবস্থাপনা এবং কর্তৃপক্ষ নানান ধরনের অনিয়ম করে থাকে। সৈয়দ নজরুল মেডিকেলের ব্যর্থ প্রশাসন কে শেল্টার দিচ্ছে স্থানীয় কিছু নেতা।
আমরা আশা করি এই গণঅধিকার পরিষদকে সাথে নিয়ে এবং জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা এই ধরনের সকল অন্যায়-অনিয়মকে উৎখাত করবো।