রংপুরের মিঠাপুকুরে আদালতের নির্দেশিত জমিতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা না করে ভুল দাগের জমিতে অবস্থিত তিনটি বাড়িতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এতে ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছেন। অন্যায় উচ্ছেদের শিকার ওই তিনটি পরিবার। এ ঘটনায় ওই জমি ফেরত সহ দায়িত্বে অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ সহ গৃহহীনদের পূর্ণবাসনের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা।
রোববার (২৪ আগস্ট) মিঠাপুকুর প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উচ্ছেদ অভিযানে বাড়িঘর হারানো হতদরিদ্ররা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগীরা জানান, মিঠাপুকুর উপজেলার ২নম্বর রানীপুকুর ইউনিয়নের বলদিপুকুর নয়াপাড়া মৌজায় মরহুম এছার উদ্দিনের দুই ছেলে সাখাওয়াত মিয়া ও এছাহাক মিয়া, মিঠাপুকুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে বলদিপুকুর নয়াপাড়া মৌজায় ২৬৪৪ দাগে, দখল স্বত্বের মামলা করেন। ওই মামলায় আদালত গত বছরের ৩ অক্টোবর সাখাওয়াত হোসেনকে একতরফা রায় দেন। সাখাওয়াত হোসেনকে আদালত ওই দাগের জমির দখল স্বত্ব বুঝে দিতে উচ্ছেদ অভিযানের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো: মুলতামিস বিল্লাহকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ২৮ জুলাই সহকারী কমিশনার ভূমি ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, নাজির, সার্ভেয়ার, শ্রমিক সহ ২৬৪৪ দাগে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু ভুলক্রমে ২৬৪৪ দাগের জমিতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা না করে ২৬৪৫ দাগে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ভুক্তভোগীদের দাবি, ২৬৪৫ দাগে তাদের তিনটি পরিবারের ছেলেমেয়ে সহ প্রায় ১৫টি টিনসেডের বাড়িঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। তারা বারবার উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেয়া কর্মকর্তাদের বোঝাতে চেয়েছিলেন তাদের বাড়িঘর ২৬৪৫ দাগে আছে। কিন্তু সেসময় তাদের কথা কেউ শোনেনি।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা বলেন, আমাদের মাথা গোঁজার কোনো ঠাঁই নেই। স্কুল ঘর এবং গাছতলায় আমরা বসবাস করছি। ছেলেমেয়ে সহ নিদারুণ কষ্টে দিন যাচ্ছে। আমাদের সাথে অন্যায় করা হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেয়া এক কর্মকর্তা প্রভাবিত হয়ে দায়িত্বে চরম অবহেলা করেছেন। এসময় তারা নিজেদের বাড়িঘর ফেরত সহ পুনর্বাসনের দাবি জানান।
এ বিষয়ে মিঠাপুকুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেয়া বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, মুনতামিস বিল্লাহ বলেন, ‘আমি আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করেছি। আদালত কর্তৃক নিযুক্ত নাজির আখিরুজ্জান, এ বিষয়ে সার্ভে করেছে। এটা ভুল হলে তাদের বিষয়। ভুক্তভোগীরা চাইলে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে।
ওই জমি দখলে নেয়া বাদি সাখোয়াত হোসেন বলেন, ‘আমাকে যেটা জমি বুঝে দিছে এটাই আমার। ভুল শুদ্ধ বুঝি না, তারা চাইলে মামলা করে আসুক। তার পূর্বে কেউ আসলে তার লাশ পড়বে।’
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মো: জিল্লুর রহমান বলেন, ‘এটা জজ কোর্টের সাভেয়ার ও নাজির দাগ নির্ণয় করেছে। তারা ভুল জায়গায় সার্ভে করেছে। এটা তাদের ভুল।’