মানিকগঞ্জে পরকীয়ার জেরেই হত্যা করা হয়েছে মা সিথি আক্তার স্মৃতি (২৩) ও মেয়ে মরিয়মকে (৩)। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রেমিক মো: সুজনকে (২৭) টাঙ্গাইলের নাগরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোসা: ইয়াসমিন খাতুন।
শিবালয় থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত টিমের বিশেষ অভিযানে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, নিহত সিথি আক্তার স্মৃতি স্থানীয় জেলে আব্দুল রাজ্জাকের তৃতীয় স্ত্রী। তিনি তার দুই কন্যাসন্তান, বাবা-মা ও স্বামীর সাথে রঘুনাথপুর (গোয়ারিয়া) এলাকায় বসবাস করতেন। গত ২৪ অক্টোবর সকালে রাজ্জাক মাছ ধরার পর বাড়ি ফেরার পথে জানতে পারেন তার মেয়ে মরিয়মের লাশ যমুনা নদীর পাড়ে জামাল মিয়ার পেয়ারা বাগানের পাশে পড়ে আছে। শিশুটির গলায় ওড়না পেঁচানো ছিল। ঘটনার পর থেকেই স্ত্রী সিথি আক্তার নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে রাজ্জাক শিবালয় থানায় মামলা করেন।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, নিহত সিথি আক্তারের সাথে সুজন শেখের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি সুজন বিদেশ (সৌদি আরব) থেকে দেশে ফিরে অন্যত্র বিয়ে করার প্রস্তুতি নিলে ক্ষুব্ধ হয়ে সিথি তাকে একাধিকবার ফোন করে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু সুজন রাজি না হওয়ায় ঘটনার দিন রাতে কৌশলে সিথিকে শিবালয়ের বাক্কারের পেয়ারা বাগানে ডেকে নেয়। পরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সে প্রথমে সিথিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে এবং পরে তার মেয়ে মরিয়মকেও হত্যা করে।
এরপর সিথির লাশ বস্তাবন্দী করে যমুনা নদীতে ফেলে দেয় এবং মেয়ের লাশও ওড়না দিয়ে বেঁধে নদীতে নিক্ষেপ করে। পরে মরিয়মের লাশ ভেসে এসে নদীর পাড়ে উঠে আসে।
গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সুজন হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে জানায় পুলিশ। পরে সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ সুপার মোসা: ইয়াসমিন খাতুন বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই আমাদের টিম তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা গোয়েন্দা তৎপরতা চালিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামি গ্রেফতারে সফল হয়েছি।’



