নীলফামারীর সৈয়দপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্র ও সেনাবাহিনীর পোশাক তৈরির কাপড়সহ সোহেল রানা (২৫) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে।
সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের খোর্দ্দ বোতলাগাড়ী হাজীপাড়ায় মরহুম মোনাফ আলী সরকারের (মোনাফ ডাকাত) বাড়িতে এই অভিযান চালানো হয়।
জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চালানো এই অভিযানের সময় কৌশলে মোনাফ আলী সরকারের ছেলে মাহামুদ হাসান রকি (২৬) পালিয়ে যান। কিন্তু ওই রুম থেকে পালানোর সময় তার সহযোগী সোহেল রানা (২৫) নামে একজনকে আটক করা হয়। এই যুবককে ধরতেই অভিযানে নামে যৌথবাহিনী।
আটক সোহেল রানা নীলফামারী সদর উপজেলার সোনারায় সংগলশী ইউনিয়নের বেড়াকুটি গ্রামের মাঝাপাড়ার আখতারুজ্জামান বাবুর ছেলে।
অভিযানে ওই রুম থেকে দু’টি বড় ছুরি, দু’টি চাকু, সেনাবাহিনীর পোশাক তৈরির আনুমানিক ১০ গজ কাপড়, একটি ল্যাপটপ, ১৩টি এন্ড্রয়েড মোবাইল, চারটি বাটন মোবাইল, ১০টি সিম, মাহমুদ হাসান রকিরসহ দু’টি পাসপোর্ট এবং শুধু স্বাক্ষররা দু’টি ১০০ টাকা ও সাতটি ৫০ টাকা মূল্যের ফাঁকা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও সোহেল রানার ব্যবহৃত লাইসেন্স বিহীন কালো রংয়ের সুজুকি আর ওয়ান ফাইভ মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়েছে।
আটক সোহেল রানা নিজেকে জিয়া মঞ্চের নীলফামারী জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘মাহামুদ হাসান রকির কাছে টাকা পাই। তাই রাতে তার বাড়িতে গেছিলাম। এমন সময় সেনাবাহিনী উপস্থিত হলে রকি পালিয়ে যায় আর আমাকে আটক করে। উদ্ধারকৃত জিনিসপত্র আমার নয়।’
নীলফামারী সেনা ক্যাম্পের মেজর জোবায়ের বিন জহিরের নেতৃত্বে এই অভিযানে সৈয়দপুর থানা পুলিশ সহযোগিতা করে। তিনি বলেন, ‘সোহেল রানা থাই জুয়া ও ভিসা প্রতারণার সাথে জড়িত। তাকে দীর্ঘদিন থেকেই আটকের চেষ্টা চলছিল। সোমবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়েই মোনাফ আলী সরকারের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।’
জিয়া মঞ্চ নীলফামারী জেলা কমিটির আহ্বায়ক গোলাম শামীম বলেন, ‘আমাদের এখনো পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি। আর আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয় না। সোহেল রানা নামে আমাদের কোনো সদস্যও নেই। কেউ যদি নিয়ে নিজেকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে থাকে, তা ঠিক নয়। আর সে যদি কোনো অপকর্ম করে সেটা তার ব্যক্তিগত। সংগঠন কখনোই দায়ী হবে না।’
সোনারায় সংগলশী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার বজলুল করিম পাখি বলেন, ‘আটক সোহেল রানার বাবা আখতারুজ্জামান কয়েক বছর আগেও আমার বাড়িতে কাজ করত। এখন তাদের হঠাৎ করে অনেক টাকা হয়েছে। কিভাবে হয়েছে তা জানি না।’
সংগলশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল হক শাহ বলেন, ‘বিষয়টা শুনেছি। আটক সোহেল থাই বা ভিসার সাথে জড়িত কিনা তা জানি না। তবে সেনাবাহিনী যে কারণে ধরেছে তা সঠিক হলে উপযুক্ত বিচার চাই।’
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফইম উদ্দিন বলেন, ‘সেনাবাহিনী গত রাতে একজনকে আটক করে হস্তান্তর করেছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে কী ধরনের অভিযোগ আনা হবে তা এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’
মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।