খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সংঘটিত সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনার জন্য আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ ও তার অঙ্গ সংগঠনকে দায়ী করে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ বলেছেন, ধর্ষণের ঘটনাকে পুঁজি করে সাধারণ পাহাড়ি নারী ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সামনে দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করছে সংগঠনটি। এসব কর্মসূচিতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে দেশীয় ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার করে গুলি করে তিনজনকে হত্যা করেছে তারা।’
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ইউপিডিএফ-কে দেশের স্বার্থে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও অবিচ্ছেদ্য অংশ রক্ষায় সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবে।’ জনজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে এ সময় তিনি অবরোধ প্রত্যাহার করারও আহ্বান জানান।
শান্তি বিনষ্ট হয় এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে ইউপিডিএফকে সতর্ক করেন রিজিয়ন কমান্ডার।
হাসান মাহমুদ বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করা এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির বিষয়টি একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। এসবের প্রমাণাদি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আছে। নানা অপপ্রচার ও উসকানির মধ্যেও সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও অবিচ্ছেদ্য অংশ রক্ষায় সবকিছু করবে।’
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা চলছে জানিয়ে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘সবাই যেন এই উৎসবে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে পারে সে সুযোগটি আমরা করে দিচ্ছি।’
এই সেনা কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, ‘অবরোধ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বজায় রাখার জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে।’ খাগড়াছড়ি ঘটনার জের ধরে রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানেও এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কাও ব্যক্ত করেন তিনি।
বহিঃশক্তি বা এখনকার একটি মহল পেছন থেকে সাহায্য করছে উল্লেখ করে ব্রি. জে. হাসান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার দিকে যাচ্ছে (জাতীয় সংসদ নির্বাচন) এটাকে নস্যাৎ করতে পারে সে ধরনের ঘটনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। অতিস্থিতিশীল করে এ ব্যাপারটি বা এলাকাটিকে যদি দেখানো যায় বাংলাদেশে এখন স্থিতিশীল পরিবেশ নাই, তাহলে এটা অন্যদিকে মোড় নিতে পারে।’
তিনি সবাইকে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার জন্য এক সাথে কাজ করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরে এক স্কুলছাত্রী ‘ধর্ষণের’ অভিযোগের জেরে ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সহিংসতায় তিনজন নিহত হন। সেনাবাহিনীর মেজরসহ ১৩ জন পুলিশের ওসিসহ তিন পুলিশ সদস্য, অফিসারসহ চার বিজিবি সদস্য, সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।