লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী- বিএসএফের গুলিতে সবুজ ইসলাম (৩০) নামে এক বাংলাদেশী যুবক নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের লাশ বিএসএফ ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
পরে, বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে চেনাকাটা ক্যাম্পের বিএসএফ কমান্ডারকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেন শমসেরনগর বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার।
জানা যায়, নিহত সবুজ জগতবেড় ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পঁচাভান্ডার গ্রামের মরহুম সিরাজুল ইসলামের ছেলে। দু’ বছর আগে সবুজ বিয়ে করেন। এক বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে তার।
বিজিবি ও এলাকাবাসী জানায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা থানার ফুলকাডাবরী গ্রামের খালপাড়া এলাকার বিপরীতে জগতবেড় ইউনিয়নের পঁচাভান্ডার সীমান্ত। ওই সীমান্তের ৮৬৪ নম্বর মেইন পিলারের ৫ নম্বর সাব পিলারের কাছে সবুজসহ আট থেকে ১০ জনের একটি দল ভারত থেকে গরু আনা-নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ভারতের ১৬৯ কোচবিহার রাণীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়নের চেনাকাটা ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাদের দেখে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। এতে সবুজ গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন।
ঘটনা জানতে পেরে বিজিবির ৬১ ব্যাটালিয়নের (তিস্তা-২) শমসেরনগর ক্যাম্পের একটি টহলদল ঘটনাস্থলে যায়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে চেনাকাটা ক্যাম্পের বিএসএফ কমান্ডারকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেন শমসেরনগর বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার।
পরে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে ঘটনাস্থলের সীমান্তের পাশে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট স্থায়ী পতাকা বৈঠক হয়। এতে ভারতের চেনাকাটা কোম্পানি কমান্ডার ও বাংলাদেশের শমসেরনগর কোম্পানি কমান্ডারসহ উভয় দেশের ১০ জন করে সদস্য বৈঠকে অংশ নেয়।
জগতবেড় ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য অহেদ আলী বলেন, ‘শমসেরনগর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার রাত সাড়ে ৩টার দিকে আমার মোবাইলফোনে কল দিয়ে বলেন, বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী একজন গরু পারাপারকারী মারা গেছেন। আপনি ঘটনাস্থলের কাছে আসেন। আমি অসুস্থ থাকায় যেতে পারিনি। পরে সকালে সবুজদের বাড়িতে গিয়ে তার মা ও স্ত্রী কাউকে পাওয়া যায়নি।’
এ ব্যাপারে বিজিবি ৬১ ব্যাটালিয়নের শমসেরনগর কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার কামাল উদ্দিন বলেন, ‘বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে বালাদেশী যুবককে গুলি করে হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সেইসাথে লাশ ফেরত চাওয়া হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সবুজের লাশ ফেরত চাওয়া হলে বিএসএফ জানিয়েছে, তারা থানা পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দেয়া হবে।’
এ ঘটনায় উভয় দেশের ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার আয়োজন চলছে বলে সুবেদার কামাল উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন।



