ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে একটি ঘোড়ার বেপরোয়া আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে স্থানীয় জনগণ দিনভর চেষ্টার পর দাবড়ে আটক করেছে ওই ঘোড়াকে।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা এলাকা থেকে ঘোড়াটি আটক করা হয়। পরে একটি বাগানে সেটি বেঁধে রাখা হয়েছে।
এর আগে সকাল থেকে উপজেলা সদরে ওই ঘোড়াটি ক্ষিপ্তভাবে হামলে পড়ে পথচারী ও যানবাহনে চলাচলরত যাকে পেয়েছে তার ওপরেই। ঘোড়ার কামড়ে একজন স্থানীয় সাংবাদিক সহ অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে গুরুতর বেশ কয়েকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনার পর এলাকাজুড়ে হঠাৎ করে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, গত দুইদিন যাবত বোয়ালমারী পৌর সদরের বিভিন্ন স্থানে ঘোড়াটি কামড়ে ও লাথি মেরে অন্তত ২০ জনকে আহত হন। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টার দিকে উপজেলা সদরের কলেজ রোড ও চৌরাস্তা এলাকায় একইভাবে লোকজনকে কামড় ও লাথি দিয়ে আহত করায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আহতদের মধ্যে স্থানীয় সাংবাদিক কাজী হাসান ফিরোজ (৬০), আতাউর রহমান (৫৫), মো: সিদ্দিক (৪৫), শহিদুল (২৫), মনিরা বেগম (৩৬), আলেয়া বেগম (৩৪) নামে কয়েকজন উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
পৌর সদরের কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা ইদ্রিস বাকের বলেন, গত দুই দিনে হঠাৎ করে মহিলা-পুরুষসহ বেশ কয়েকজন ঘোড়ার কামড়ে আহত হন। রোববার সকালে ঘোড়ার কামড়ে আহত বেশ কয়েকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পৌরসভার আঁধারকোঠা মহল্লার বাসিন্দা মো: নিজাম উদ্দিন খান বলেন, ‘পৌর সদরের বিভিন্ন স্থানে গত দুই দিনে নারীসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন এই ঘোড়ার আক্রমণে। ঘোড়াটি সামনে যাকে পাচ্ছে তাকেই কামড়াচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ঘোড়াটি কোন কুকুরের কামড়ের কারণে বেপরোয়া আচরণ করছে। সামনে কাউকে পেলেই কামড়াচ্ছে আর লাথি মারছে।’
ঘোড়ার কামড়ে গুরুতর আহত কাজী হাসান ফিরোজ বলেন, ‘সকালে হাঁটার জন্য রেলস্টেশনে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে চৌরাস্তায় পৌঁছালে একটি ঘোড়া দৌঁড়ে এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই পেছন থেকে কোমড়ে কামড় দেয়। তাৎক্ষণিক লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে এখন বাড়িতে আছি। তবে আক্রান্ত স্থানে তীব্র ব্যথা অনুভব হচ্ছে। আমার জানা মতে, সকালেই কমপক্ষে ছয়জন ঘোড়ার আক্রমণে আহত হন।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা: মোর্শেদ আলম বলেন, ‘সকালে ঘোড়ার কামড়ে আহত বেশ কয়েকজন চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসেন। আহতদের ব্যাথানাশক ওষুধ ও টিটেনাস ইনজেকশন দেয়া হয়েছে। আহতদের ভাষ্য অনুযায়ী ধারণা করা হচ্ছে, ঘোড়াটিকে কোনো কুকুর কামড়িয়েছে। যার কারণে ঘোড়াটি এমন আচরণ করছে।’