যমুনায় অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে যমুনা নদীর ভাঙনে ইতোমধ্যে বাজারসহ অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)

Location :

Manikganj
মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী
মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী |নয়া দিগন্ত

মানিকগঞ্জ দৌলতপুরে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী।

শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কয়েক শ’ মানুষ একত্রিত হয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভে বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো: গোলাম ইয়াছিন, বাঘুটিয়া আলিম মাদরাসার সাবেক সুপার মাওলানা তাজুল ইসলাম ও ইউনিয়ন পরিষদের সকল ইউপি সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে যমুনা নদীর ভাঙনে ইতোমধ্যে বাজারসহ অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে চারতলা ভবনের দুটি মাদরাসাসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এদিকে বাচামারা ইউনিয়নের নিজ ভারাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবন সম্পূর্ণ নদীতে তলিয়ে গেছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে।

এর আগে জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা ও দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে লিখিত অভিযোগ দেন নদীপাড়ের ভুক্তভোগীরা।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে সংবাদও প্রকাশিত হয়। এরপর গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে নৌ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এম সাখাওয়াত হোসেন নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে এবং পাটুরিয়ায় অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের অপসারণের নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেন জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লাকে।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিয়ান নুরেন জানান, ‘ইজারা দেয়া সীমানার বাইরে বালু কাটার সুযোগ নেই। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ফরিদপুর অঞ্চলের নৌ-পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সীমানার বাইরে গিয়ে কেউ বালু উত্তোলন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের সাথে কারো সখ্যতা নেই। আগেও অভিযান চালিয়ে মামলা দিয়েছি।’

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, ‘ইজারার সীমানা লঙ্ঘন করে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা ইতোমধ্যে অভিযান চালিয়েছি এবং নিয়মিত মামলা দিচ্ছি। এ অভিযান আরো কঠোরভাবে চলবে।’

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনের কঠোর বক্তব্য কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। ফলে নদীভাঙন পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ মে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ইজারা ঘোষণা করার সময় ইজারাদারদের স্পষ্ট নির্দেশ দেয়া হয়েছিল শর্ত ভঙ্গ করলে তাদের ইজারা বাতিল করা হবে। তবুও নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।