উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ সুরক্ষায় ছাড়পত্র প্রদানে অনিয়ম দূর করতে হবে

‘পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ, ছাড়পত্র প্রদানে অনিয়ম দূর করতে হবে। আইন প্রয়োগ মানে শুধু জরিমানা নয়। এতে স্বচ্ছতা, বিকল্প ব্যবস্থা ও জনগণের সম্পৃক্ততা থাকতে হবে।’

মোহাম্মদ আলী ঝিলন, গাজীপুর

Location :

Gazipur
পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ, ছাড়পত্র প্রদানে অনিয়ম দূর করতে হবে : উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ, ছাড়পত্র প্রদানে অনিয়ম দূর করতে হবে : উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান |নয়া দিগন্ত

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ, ছাড়পত্র প্রদানে অনিয়ম দূর করতে হবে। আইন প্রয়োগ মানে শুধু জরিমানা নয়। এতে স্বচ্ছতা, বিকল্প ব্যবস্থা ও জনগণের সম্পৃক্ততা থাকতে হবে। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও আইন প্রয়োগে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভ্রান্ত পরিবেশ ছাড়পত্র কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুরে ড্রিম স্কয়ার রিসোর্টে বিশ্বব্যাংক আয়োজিত ‘Strengthening Environmental Regulatory and Enforcement Capacity for a Sustainable Bangladesh’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ডাইং কারখানা, সিমেন্ট কারখানা ও ইটভাটার মতো প্রধান দূষণ উৎসকে অগ্রাধিকার দিয়ে শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। সবচেয়ে দূষণকারী শিল্পগুলোকে চিহ্নিত করে বাজেট ও পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। দূষণকারীদের নাম প্রকাশ্যে আনুন। তথ্য উম্মুক্ত করলে জনগণ নিজেরাই রাজনৈতিক চাপ মোকাবিলায় সহায়ক হবে।

উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, বন্যা প্রবাহ এলাকা বা পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল স্থানে বর্জ্য ফেলার কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ছাড়পত্র দেয়ার কঠোর সমালোচনা করেন। এ ধরনের ছাড়পত্র অবৈধ ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। রাজনৈতিক চাপ থাকলেও আপত্তি জানাতে হবে। দায়িত্ব পালন করতে না পারলে বদলি হোন, কিন্তু পরিবেশের সঙ্গে আপস করবেন না, তিনি সতর্ক করেন। পরিবেশ ছাড়পত্র প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সকল লাল ক্যাটাগরির শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (EIA) প্রতিবেদন পরিবেশ অধিদফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং জনগণের মতামত বিবেচনা করার আহ্বান জানান।

একটি দূষণকারী সিরামিক কারখানাকে জাতীয় পুরস্কার দেয়ার উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, ‘দূষণকারীদের শাস্তি দিতে হবে, পুরস্কৃত নয়। এছাড়া, অভিযোগ নিষ্পত্তি ডিজিটালাইজেশন, অভিযোগ ট্র্যাক করার জন্য মোবাইল অ্যাপ চালু এবং স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যাঁ পেসম, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) নাফিসা আরেফিন, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ, বেস্ট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এ কে এম রফিকুল ইসলাম এবং বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ বুশরা নিশাত বক্তব্য দেন।

পরে উপদেষ্টা পরিবেশ অধিদফতরের সারাদেশ থেকে আগত কর্মকর্তাদের ৩দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিবেশ সুরক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।