গোলাম পরওয়ার

জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট দিন, জনগণের মতামতই সরকারের ভিত্তি

‘যারা জুলাই সনদ মানতে চায় না, তাদের জন্য ২৬ সালের জাতীয় নির্বাচন নয়। জনগণকে ধোঁকার মধ্যে রাখা যাবে না। গণভোটের আগে জাতীয় নির্বাচন দেওয়া মানেই জুলাই সনদের বৈধতা এড়িয়ে যাওয়া।’

খুলনা ব্যুরো

Location :

Khulna
খুলনায় জনসমাবেশে মিয়া গোলাম পরওয়ার
খুলনায় জনসমাবেশে মিয়া গোলাম পরওয়ার |নয়া দিগন্ত

‘জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট দিন, জনগণের মতামতই সরকারের ভিত্তি’ উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘যারা জুলাই সনদ মানতে চায় না, তাদের জন্য ২৬ সালের জাতীয় নির্বাচন নয়। জনগণকে ধোঁকার মধ্যে রাখা যাবে না। গণভোটের আগে জাতীয় নির্বাচন দেওয়া মানেই জুলাই সনদের বৈধতা এড়িয়ে যাওয়া।’

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় খুলনা নগরীর দৌলতপুর থানাধীন শহীদ মিনার চত্বরে দৌলতপুর থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত এক জন সমাবেশে এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার একই দিনে দু’টি ভোট আয়োজনের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক ও জনবিরোধী হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট না দিলে জাতিকে গভীর সংকটে ফেলে দেয়া হবে। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের সংশোধন এনে এখনো এই ভুল সংশোধনের সুযোগ রয়েছে।’

দৌলতপুর থানা জামায়াতে ইসলামীর আমির মুশাররফ আনসারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান। মহানগরী ব্যবসায়ী থানার সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান স্বপনের পরিচালনায় সমাবেশে আরো বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক নজিবুর রহমান, মহানগরী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম, প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আজিজুল ইসলাম ফারাজী, খুলনা জেলা সহকারী সেক্রেটারি গাউসুল আযম হাদী, অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম, খুলনা জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ইউসুফ ফকির, মহানগরী সেক্রেটারি রাকিব হাসান, মহানগরী যুববিভাগের সভাপতি মুকাররম বিল্লাহ আনসারী প্রমুখ।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘একই দিনে গণভোট আর জাতীয় নির্বাচন দিয়ে জনগণকে সংকটে ফেলে দেয়া হয়েছে। ঘোষণা সংশোধন করে জাতীয় নির্বাচন এর আগে গণভোট দিন, জনগণের মতামতই হবে সরকারের ভিত্তি। আগামী ২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের আইনি কোনো ভিত্তি নেই। সংবিধানে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্তর নির্বাচন হওয়ার কথা আছে। সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছে ২০২৪ সালে। সংবিধানের অনেক ধারা এবং অনেক অনুচ্ছেদে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা কিভাবে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান হয়েছেন তাও সংবিধানের নেই। বাংলাদেশের সংবিধানের অন্তবর্তী সরকারের কোনো বিধান নেই। সুপ্রিম কোর্টের একটি রেফারেন্স এর ভিত্তিতে এই সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু এই রেফারেন্সে কখনো ক্ষমতা গ্রহণের ভিত্তি হতে পারে না। সেই কারণে বর্তমান অন্তবর্তী সরকার যেমন সংবিধানে নেই, নির্বাচনের মেয়াদ সংবিধানে নেই। প্রধান উপদেষ্টা সংবিধানে নেই। সুতরাং জুলাই সনদ একমাত্র সংবিধানের অংশ হতে পারে আর এর মাধ্যমেই সকল বিষয়কে আইনি ভিত্তি দেওয়া যেতে পারে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘একটি বড় রাজনৈতিক দল নাকি সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার সাথে গোপন বৈঠক করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। নির্বাচনের দাবি ও আন্দোলন-দুটোই একসাথে চলবে। গণভোট ছাড়া নির্বাচন হলে গণতন্ত্রের জন্য তা বড় হুমকি হবে।’

জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল আরো বলেন, ‘আগামী ১৬ নভেম্বর দেশের ৮টি ইসলামী রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা বৈঠকে বসবেন এবং সেখানে পরবর্তী করণীয় ও সম্ভাব্য আন্দোলনের রূপরেখা নির্ধারণ হবে। সেখানে যে সিদ্ধান্তই হোক, সবাইকে সেই সিদ্ধান্তের আলোকে আন্দোলনে যুক্ত হতে হবে।’