ফেনী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির উদ্দিনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন জেলা বিএনপির সদস্য কামরুল হাসান মাসুদ। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন নোডাল সিটি প্রকল্পের আওতায় শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক সম্প্রসারণ, ফুটপাত ও ড্রেন নির্মাণ কাজ না পাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটান বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলী জাকির।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ২৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকার প্রকল্পের দরপত্রে নির্ধারিত সময়ে জেবি ও পিডিএল নামীয় দু’টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। দরপত্র মূল্য থেকে ৩ শতাংশ কম দামে প্রস্তাব দেয়ায় পিডিএল প্রতিষ্ঠানটি মূল্যায়নে নির্বাচিত হয়। চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরের জন্য পিডিএল কর্তৃপক্ষ একজন প্রতিনিধি পাঠালে নিয়ম অনুযায়ী দ্বিতীয় প্রতিনিধি হিসেবে একজন ঠিকাদারকে ডেকে আনা হয়। এ সময় কামরুল হাসান মাসুদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হট্টগোল শুরু করেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির উদ্দিন জানান, দরপত্র ই-জিপি পদ্ধতিতে জমা হওয়ায় ম্যানুয়ালভাবে কাউকে কাজ দেয়ার সুযোগ নেই। মাসুদ দরপত্রে অংশ না নিয়েই কাজ দাবি করেন এবং সোমবার সন্ধ্যায় পৌরসভায় এসে তাকে মারধর করতে উদ্যত হন। একপর্যায়ে তার সামনে থাকা ল্যাপটপ ও ফাইলপত্র ছুঁড়ে ফেলেন।
পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মোহাম্মদ বাতেন জানান, বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকেও অবহিত করা হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
তিনি আরো জানান, সময় মতো কাজ শুরু না হলে বরাদ্দ ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা ছিল, তাই রাতেই পিডিএল প্রতিনিধির সাথে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে।
অভিযুক্ত কামরুল হাসান মাসুদের বক্তব্য জানতে সোমবার রাতে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, ‘ঘটনাটি বিএনপির হাইকমান্ডে জানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, কামরুল হাসান মাসুদের নিজস্ব ঠিকাদারি লাইসেন্স থাকলেও তিনি অন্য ঠিকাদারদের কাছ থেকে কমিশনের ভিত্তিতে কাজ করতেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের কাজ ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপি নেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।



