নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় বিচারপ্রার্থীদের মারধর, বিএনপির আহ্বায়কসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এর আগে ঘটনায় মামলা করতে গেলে এজাহারে আপত্তি জানায় পুলিশ। পরে রাত ২টার দিকে ফতুল্লা থানা গেটের সামনে শিশুসন্তানকে নিয়ে বসে কান্নাকাটি করতে থাকেন রাজিয়া সুলতানা। একপর্যায়ে মামলা নিতে বাধ্য হয় পুলিশ।

কামাল উদ্দিন সুমন, নারায়ণগঞ্জ

Location :

Narayanganj
নয়া দিগন্ত

নারায়ণগঞ্জের আদালতপাড়ায় শিশু সন্তানদের সামনে বিচারপ্রার্থী বাবা ও মাকে মারধরের ঘটনায় মহানগর বিএনপির আহ্বায়কসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। হামলার শিকার রাজিয়া সুলতানা নিজেই বাদি হয়ে মামলাটি করেন।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার।

মামলার আসামিরা হলেন- মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান (৫০), সাত্তারের ছেলে ইসমাইল (৪৬), হিরন (৩৮), শাহালম (৪৮), টিটু (৫০), রাসেল ব্যাপারি (৩৫), অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম (৪০), অ্যাডভোকেট আল আমিন (৩৯), অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন (৩৮)। এছাড়া অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মামলার বাদি রাজিয়া সুলতানা জানান, ‘থানা থেকে আমাকে ফোন করে জানানো হয়েছে যে মামলাটি নেয়া হয়েছে। আমরা থানা থেকে মামলার কপিটি সংগ্রহ করেছি।’

নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মো: জসিম উদ্দিন জানান, ‘এ ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।’

এর আগে মামলার বাদি রাজিয়া সুলতানার স্বামী ইরফান মিয়া (৪২) রোববার একটি মামলার শুনানিতে অংশ নিতে আদালতে গেলে তার ওপর হামলা চালান অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের জুনিয়র আইনজীবী ও মুহুরি। এতে ইরফান মিয়া, তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা (৩৮) ও তাদের দুই সন্তান আহত হন।

ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে রাতেই রাজিয়া সুলতানা আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেনসহ নয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত চার থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। তবে মামলা করতে গেলে এজাহারে আপত্তি জানায় পুলিশ। পরে রাত ২টার দিকে ফতুল্লা থানা গেটের সামনে শিশুসন্তানকে নিয়ে বসে কান্নাকাটি করতে থাকেন রাজিয়া সুলতানা।

কান্না করতে করতে তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের এসপি, সার্কেল এসপি ও ওসি কেউ আমার মামলা নেয়নি। এখানে কেউ আসবেন না, এখানে কোনো বিচার নাই। মামলা না নেয়া পর্যন্ত আমি থানার গেট থেকে যাব না।’

একপর্যায়ে পুলিশ রাজিয়া সুলতানার অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করতে বাধ্য হয়।

এদিকে হামলার ঘটনার সাথে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে ক্লিন ইমেজ নষ্ট করতে এ ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।