কক্সবাজারের উখিয়ায় লাখো মানুষের চোখে অশ্রু আর বুকভরা ক্ষোভ নিয়ে পালিত হলো রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস-২০২৫।
আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, নারী নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ন্যায়বিচার আদায়ের দাবিতে উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালিত হয়।
এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় ক্যাম্প-৯-এর ডি ব্লক, সাব-ব্লক সি-৬-এর বলি বাজার মাঠে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মুফতী আনিস। নেতৃত্ব দেন এফডিএমএন সদস্য মাস্টার সাদেক ও আরএসও নেতা মৌলভী মোহাম্মদ নূর।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হেড মাঝি আবদুল আমিন, আরকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচআর) নেতা ডা. জুবায়ের, রহমত উল্লাহ, সাদেক হোসেন, আহমেদ, ইউসুফ, হেলাল (কায়ু মাইং), মোলভী বনি আমিন, নজিমুল্লাহ, মোলভী সাদেক, ক্যাম্প-৯ এর শমসু নূর এবং ক্যাম্প-১১ এর রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশন (আরএসও) সদস্য সায়েদুল আমিনসহ রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, ‘আরাকানে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধদের ওপর যে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে, তা মানব ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস অধ্যায়।’
তারা অভিযোগ করেন, রাখাইনের মগ বাহিনী ও মিয়ানমার সেনারা রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে, হাজারো নারীকে ধর্ষণ করেছে এবং লাখো মানুষকে দেশত্যাগে বাধ্য করেছে। বক্তারা আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার এবং টেকসই রাজনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানান।
আলোচনা শেষে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া পরিচালনা করেন মোলভী জুবায়ের।
শুধু ক্যাম্প-৯ নয়, একই উদ্দেশ্যে উখিয়ার অন্যান্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও পালিত হয় গণহত্যা দিবস। ক্যাম্প-১/ডব্লিউ লাম্বাশিয়ায় RCPR আরসিপিআর নেতা দীল মোহাম্মদের নেতৃত্বে আয়োজিত কর্মসূচিতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা অংশ নেন। এছাড়া ক্যাম্প-৪, ক্যাম্প-৯ এবং ক্যাম্প-১৭-তেও ব্যাপক গণজমায়েত হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযানের মুখে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। সেই ভয়াল দিনটির স্মৃতিই আজও রোহিঙ্গাদের কাছে রক্তাক্ত ইতিহাস হয়ে আছে। প্রতি বছর এ দিনে তারা গণহত্যা দিবস পালন করে আসছে।