গলাচিপায় বিএনপির অফিস ভাঙচুরের পর অবরুদ্ধ ভিপি নুর

গলাচিপা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা

Location :

Galachipa
নুরুল হক নুর
নুরুল হক নুর |ফাইল ছবি

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিএনপিকে দায়ী করছেন ভিপি নুর।

এর আগে, বিএনপির আলোচনা সভায় গণঅধিকার পরিষদ নেতাকর্মীরা হামলা করার অভিযোগ ওঠে। এতে বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর ও ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার বকুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের পাতাবুনিয়া বটতলা এলাকায় আয়োজিত এক স্মরণসভায় অংশ নেয় ভিপি নুর। সভা থেকে ফেরার পথে রাত পৌনে ১০টায় পাতাবুনিয়ার বটতলা এলাকায় অবরুদ্ধ হন তিনি। পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাকে উদ্ধার করে। পরে রাত ৩টার দিকে গলাচিপা ডাকবাংলোতে রাত্রিযাপনের উদ্দেশে যান নুর।

নুরুল হক নুর তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেয়া পোস্টে উল্লেখ করেন, গলাচিপা উপজেলার পাতাবুনিয়া বটতলা বাজারে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা রাস্তায় গাছ ফেলে গুলতি (ছটকা), লোহার রড, রামদা নিয়ে তাদের পথরোধ করেন।

এ সময় স্থানীয় কয়েকজনকে মারধর করে দু’টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।

নুরের সাথে থাকা গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় আর্ন্তজাতিকবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল আমীন জানান, ঘটনার কিছুক্ষণ পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তাদের পাতাবুনিয়া বাজারে বাসিয়ে রাখেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা বাসিয়ে রাখার পর সেনাবাহিনী ও পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা দিতে অপারগতা জানিয়ে নুর ও তাদের দলীয় লোকদের গলাচিপা এলাকা ত্যাগ করে পটুয়াখালী জেলা শহরে যেতে অনুরোধ জানান।

তিনি আরো জানান, এরপর তারা সেনাবাহিনী ও পুলিশের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা না পেয়ে গলাচিপা ডাকবাংলোতে রাত্রিযাপনের উদ্দেশে চলে যান।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে চরবিশ্বাস বাজারে ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে কর্মিসভার আয়োজন করে ইউনিয়ন বিএনপি। একই সময়ে পাশাপাশি এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ব্যানারে সভা ছিল। বিএনপির ওই আলোচনা সভায় গণঅধিকার পরিষদ নেতাকর্মীরা হামলা করার অভিযোগ করেছে বিএনপি। এতে বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর ও ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা একটি কর্মীসভা করছিলাম। সেই সময় ভিপি নুরের ভাই আমীনুল ও তার লোকজন এসে আলোচনা বন্ধ করতে বলেন। আমরা আলোচনা বন্ধ করলেও, অকারণে তারা আমাদের ওপর চড়াও হন এবং চেয়ার ছুঁড়ে মারেন। অফিসের আসবাবপত্র ভেঙ্গে ফেলা হয়। আমাদের ৮-১০ জন নেতাকর্মী আহত হন এবং ওই রাতেই ১০ কিলোমিটার নদী পাড়ি দিয়ে ২৫ কিলোমিটার দূরে গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচজনকে ভর্তি করা হয়।’

নুরুল হক নুর ফেসবুকে আরো লেখেন, ‘এলাকার সন্তান হিসেবে মানুষের ভালোবাসা থাকায় আওয়ামী লীগের লোকেরাও আমাদের সাথে ঝামেলা করতে সাহস পায়নি। অথচ আজ বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসান মামুনের নির্দেশে বাকের বিশ্বাসের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে!’

অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন তার ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, চরবিশ্বাস ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মজিবর রহমান, ৬৮ নম্বর সদস্য মোজাম্মেল সরদার, আওয়ামী লীগ নেতা নেছার মেম্বার, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাসেলসহ আওয়ামী দূর্বৃত্তরা গণঅধিকারের ঘাড়ে পা দিয়ে বিএনপির চরবিশ্বাস ইউনিয়ন কার্যালয়ে হামলা করে, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাকর্মীদেরকে আহত করে।

গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আসাদুর রহমান জানান, উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক ১৪৪ ধারা জারি করায় বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।