বড়াইগ্রামে জুসের সাথে বিষ খাইয়ে নাতিকে হত্যার অভিযোগ

নাটোরের বড়াইগ্রামে জুসে বিষ খাইয়ে দু’বছরের নাতিকে হত্যার অভিযোগ দাদির বিরুদ্ধে; ময়নাতদন্তের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

মন্তাজুর রহমান রানা, বড়াইগ্রাম (নাটোর)

Location :

Baraigram
বড়াইগ্রাম থানা
বড়াইগ্রাম থানা |সংগৃহীত

নাটোরের বড়াইগ্রামে দাদির বিরুদ্ধে বিয়ের বাড়িতে নুর ইসলাম নামে দু’বছর বয়সী নাতিকে জুসের সাথে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় হাসপাতালে নেয়ার পথে শিশুটির মারা যায়। এর আগে বিকেলে উপজেলার ইকড়ি গ্রামের শাহাদাত শাহের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নুর ইসলাম জেলার গুরুদাসপুর উপজেলা সোনাবাজু পুর্বপাড়া গ্রামের শাকিল আহম্মেদ ও পায়েল খাতুন দম্পতির একমাত্র সন্তান।

অভিযুক্ত সখিনা বেগম (৪৫) সোনাবাজু পুর্বপাড়া গ্রামের আব্দুল মোতালেবের স্ত্রী।

এদিকে, শিশুটির মৃত্যু খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন দাদিকে ঘরের জানালার সাথে বেঁধে ব্যাপক গনপিটুনি দিয়েছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে বড়াইগ্রাম উপজেলার রোলভা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে পায়েল খাতুনের সাথে সোনাবাজু গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে শাকিল হোসেনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পুত্রবধূর সাথে শাশুড়ির কলহ-বিবাদ চলে আসছিল। এমনকি মাঝে মাঝেই পুত্রবধূকে মারধরও করতেন তিনি। সর্বশেষ মাস তিনেক আগে পুনরায় তাকে পিটিয়ে জখম করলে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে চলে যান শাকিল। শুক্রবার শাকিল স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একই উপজেলার ইকড়ি গ্রামে মামা শাহাদাত শাহের বাড়িতে বিয়ে খেতে যান। শাকিলের মা-ও ওই বাড়িতে দাওয়াত খেতে যান। সেখানে ছেলে ও ছেলের বউসহ নাতির সাথে তার দেখা হয়।

শিশুটির মা পায়েল খাতুন অভিযোগ করেন, শনিবার তার মামাত দেবরের বৌভাত অনুষ্ঠান চলছিল। দুপুর ১২টার দিকে তিনি ছেলেকে ঘুম পাড়িয়ে বাইরে যান। দেড়টার দিকে তার শাশুড়ি শিশুটিকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে জুস খাওয়ান। এরপরই তার শাশুড়ি হঠাৎ করেই বিয়ে বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে চলে যান। কিছুক্ষণ পরই তার ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে দ্রুত বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিষাক্ত কিছু খাওয়ানো হয়েছে বলে জানিয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নেয়ার পথে নাটোর শহরের কাছাকাছি যাওয়ার পর শিশুটি মারা যায়।

সংসার ছাড়া করতে পরিকল্পিতভাবে জুসের সাথে বিষ মিশিয়ে শাশুড়ি তার ছেলেকে খাইয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

সখিনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে নিজেই জুস কিনে দিয়েছে। সেই জুস আমিও খেয়েছি, নুর ইসলামসহ মেয়ের ঘরের নাতিকেও খাইয়েছি। আমাদের তো কিছু হয়নি, কিন্তু সে কিভাবে মারা গেল আমি জানি না। পারিবারিক কলহ থাকায় আমাকে ফাঁসাতে ছেলের বউ এগুলো বলছে।’

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারোয়ার হোসেন জানান, আপাতত এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার শিশুটির লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত শিশুটির মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত নয়। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।