গাজীপুরে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তার হত্যা রহস্য উন্মোচন

মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য মোবাইল ছিনতাই করে এবং বাধা দেয়ায় ছুরিকাঘাতে সিদ্দিকুর রহমানকে হত্যা করে।

মোহাম্মদ আলী ঝিলন, গাজীপুর

Location :

Gazipur
গ্রেফতার ইমরান
গ্রেফতার ইমরান |নয়া দিগন্ত

গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় আসামি ইমরানকে (৩০) গ্রেফতার ও হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে র‌্যাব-১।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় র‌্যাব-১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) রাকিব হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করছেন।

নিহত সিদ্দিকুর রহমান (৫৮) বরিশালের বাবুগঞ্জ থানার মরহুম ইসমাইল ফকিরের ছেলে। তিনি টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মধুমিতা রোড এলাকায় পরিবারসহ ভাড়া বাসায় থাকতেন। সিদ্দিক রাজধানীর কেরানীগঞ্জে বিদ্যুৎ বিভাগে বিদ্যুৎ ট্রান্সমিটারের স্টোর কিপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

আসামি ইমরান গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানার কড্ডা (কালাকুর) এলাকার ইউনুস তালুকদারের ছেলে।

রোববার সন্ধ্যা পৌণে ৬টার দিকে টঙ্গীর চিহ্নিত মাদক স্পট হিসেবে পরিচিত মাজার বস্তি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার সাথে থাকা ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। সে একজন পেশাদার ছিনতাইকারী। গ্রেফতার ইমরান বর্তমানে র‌্যাব-১ এর হেফাজতে রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

র‌্যাব-১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) রাকিব হাসান জানান, সিদ্দিক শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গীর বাসা থেকে তার কর্মস্থল রাজধানীর কেরানীগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন। টঙ্গী পূর্ব থানাধীন বিআরটি প্রকল্পের উড়াল সেতুর উপরে ওঠার সময় ছিনতাইকারী ইমরান তার পথরোধ করে। এসময় ছিনতাইকারী তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। এতে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ছিনতাইকারী ইমরানের সাথে থাকা ছুরি দিয়ে সিদ্দিকের বাম হাতের উপরে তিনটি আঘাত করলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলের নিচে সিঁড়ির কাছেই সিদ্দিকুরের মৃত্যু হয়। পরে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ইমরান টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন মাজার বস্তিতে আশ্রয় নেন এবং মোবাইলটি ১০০০ টাকায় বিক্রি করে আত্মগোপন করে। হত্যার ঘটনায় শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি হত্যা মামলা করে নিহতের স্বজনেরা। বিষয়টি আমলে নিয়ে র‌্যাব-১ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামিকে গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। তারা ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং ফেলে যাওয়া আলামত পর্যালোচনা করে ঘাতক ছিনতাইকারী ইমরানকে শনাক্ত করে। রোববার সন্ধ্যা পৌণে ৬টার দিকে টঙ্গীর চিহ্নিত মাদক স্পট হিসেবে পরিচিত মাজার বস্তি থেকে ইমরানকে গ্রেফতার করে।

তিনি আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান স্বীকার করে সে মাদকসেবী। মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য মোবাইল ছিনতাই করে এবং বাধা দেয়ায় ছুরিকাঘাতে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানকে হত্যা করে। ছিনতাইকৃত মোবাইলটি মাজার বস্তিতে ১০০০ টাকায় বিক্রি করেন তিনি।