সিলেটে যানজট নিরসনে এনসিপির ‘২৭ দফা টেকসই সমাধানের প্রস্তাবনা’

শনিবার বিকেল ৪টার দিকে সিলেট নগরীর আম্বরখানাস্থ একটি হোটেলে ‘সিলেটে যানজট নিরসনে টেকসই সমাধান’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়।

আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট ব্যুরো

Location :

Sylhet
সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়
সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয় |নয়া দিগন্ত

সিলেট নগরীতে কয়েক দিন ধরে চলছে মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ অভিযান। অভিযানে প্রতিদিনই আটক করা হচ্ছে অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। যার প্রতিবাদে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাই মালিক-শ্রমিকরাও আন্দোলন করেছেন। এমন প্রেক্ষাপটে ব্যাটারিচালিত রিকশা বৈধতা, পার্কিং স্ট্যান্ড, আলাদা লেনসহ ২৭ দফা প্রাথমিক প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা।

শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে সিলেট নগরীর আম্বরখানাস্থ একটি হোটেলে ‘সিলেটে যানজট নিরসনে টেকসই সমাধান’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির পক্ষ থেকে ২৭ দফা প্রাথমিক প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) এহতেশাম হক।

তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালের বিপ্লবে পরিবহন শ্রমিকরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে দেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমরা মনে করি, তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে প্রত্যেক নাগরিকের সংহতি প্রকাশ করা কর্তব্য। মিথ্যা মামলা, হামলা বা নির্যাতন কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। যেকোনো সঙ্কট ও অচলাবস্থা দূরীকরণে প্রশাসন, রাজনৈতিক দল ও শ্রমিক সংগঠনকে সম্মিলিতভাবে সমাধানমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এ বাস্তবমুখী পদক্ষেপগুলো সিলেটের যানজট নিরসন, সড়ক নিরাপত্তা ও টেকসই নগর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সিলেটের যানজট সমস্যার টেকসই সমাধানে এ ২৭ দফা প্রস্তাবনা ফাইনাল নয়। আমরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারদের সাথে বসবো। স্থানীয় প্রশাসন ও নাগরিক সমাজের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে আশা করি সিলেটে এ সেক্টরে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে।’

এনসিপির ২৭ দফা প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে, বৈদ্যুতিক থ্রি হুইলার ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০২৫ প্রজ্ঞাপন জারির আগে অংশগ্রহণমূলক নীতি প্রণয়ন করা; অটোরিকশাজনিত সমস্যাগুলোর গবেষণাভিত্তিক তথ্য প্রকাশ; যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটি গঠন; ব্যাটারিচালিত রিকশার যান্ত্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ; ড্রাইভিং লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা ও চালকদের প্রশিক্ষণ প্রদান; ব্যাটারিচালিত রিকশার গ্যারেজ তালিকা প্রণয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; নির্দিষ্ট পার্কিং স্ট্যান্ড; চার্জিং স্টেশন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার; অটোরিকশার নিবন্ধনসহ যাবতীয় ফি নির্ধারণে আলোচনা করা; ব্যাটারিচালিত রিকশা রেকার ফি বৈষম্য দূরীকরণ; পরিবেশবান্ধব ডিসপোজাল ও চার্জিং নীতি গ্রহণ; নির্দিষ্ট রোডে যানবাহনের সীমা নির্ধারণ; অপ্রাপ্তবয়স্ক ও লাইসেন্সবিহীন চালক শনাক্তকরণ; ট্রাফিক শিক্ষা ও সচেতনতা কর্মসূচি চালু; প্যাডেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশার জন্য আলাদা লেন চালু করা; ভাড়ার তালিকা প্রদর্শন; সড়ক প্রশস্তকরণ ও অপ্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান স্থানান্তর; উঁচু ভবন নির্মাণে সীমাবদ্ধতা ও হাসান মার্কেট সংস্কার; হকার ব্যবস্থাপনা ও সড়ক নিরাপত্তা অবকাঠামো উন্নয়ন; ডিজিটাল ট্রাফিক সিস্টেম প্রবর্তন ও টার্মিনাল স্থানান্তর এবং মাজার এলাকা যানবাহন ব্যবস্থাপনা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।