পদ্মা সেতু রক্ষা বাঁধের আরো ৫০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন

নাওডোবার জিরো পয়েন্ট এলাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ মিটার বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

Location :

Shariatpur
ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে পদ্মা পাড়ের দুইটি গ্রামের শতাধিক পরিবারের।
ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে পদ্মা পাড়ের দুইটি গ্রামের শতাধিক পরিবারের। |ছবি : নয়া দিগন্ত

ভাঙনের কারণে কয়েক বছর আগেও পদ্মা নদীর নাম শুনলে গা শিউরে উঠত শরীয়তপুরসহ আশেপাশের জেলার মানুষের। কয়েক বছর ভাঙন না থাকলেও ফের ভয়াল রূপে ফিরছে পদ্মা নদী। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় দফায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধসহ স্থানীয়দের বসতবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে। দ্বিতীয় দফার ভাঙনে নাওডোবার জিরো পয়েন্ট এলাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ মিটার বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে দুইটি গ্রামের শতাধিক পরিবারের।

গত সোমবার (৭ জুলাই) ভাঙন শুরু হলেও পরদিন মঙ্গলবার তেমন কোনো ভাঙন ছিল না। তবে দ্বিতীয় দফায় বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে পদ্মা আবারো তার ভয়াল রূপ ধারণ করে। ভাঙন আতঙ্কে ইতোমধ্যে নদীর পাড় থেকে বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন স্থানীয়রা।

গত দুই দিনে পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধের মোট ২০০ মিটার অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড।

স্থানীয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন পর গত সোমবার আগ্রাসী পদ্মার ভাঙন দেখা দেয়। এতে জাজিরায় পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধের প্রায় ১৫০ মিটার বাঁধ বিলীন হয়ে যায়। ওই দিন ভয়াবহ পদ্মার ভাঙনে বাঁধের পাশে থাকা ১২টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কয়েকটি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরপর আজ বুধবার আবারো পদ্মাসেতু রক্ষা বাঁধের জিরো পয়েন্টে ভাঙন শুরু হয়।

বিকেল থেকে পদ্মার ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করলে নাওডোবার জিরো পয়েন্ট এলাকার দুইটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দুইটি বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পদ্মার ভাঙন থামেনি। ফলে ভাঙন আতঙ্কে নদীর তীরবর্তী জাজিরার পূর্ব নাওডোবা ইউপির চেয়ারম্যান আলতাফ খানের বাড়িসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি বাড়ির স্থাপনা অন্যত্র সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের আশঙ্কা দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে নদীতে বিলীন হবে রাস্তাঘাট, হাট-বাজারসহ শতাধিক বসতবাড়ি।

ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে স্থানীয়রা বলছেন, যে পরিমাণ ডাম্পিং করা হচ্ছে, তাতে ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না। স্থায়ী প্রকল্পের ব্যবস্থা করা না হলে বিলীন হয়ে যাবে নাওডোবার বিস্তৃর্ণ এলাকা।

স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন নামে একজন বলেন, নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে পাড়ের কাছে চলে আসায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শত শত পরিবার নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বলেন, গত দুই দিনে পদ্মার ভাঙনে বাঁধের ২০০ মিটার নদীতে বিলীন হয়েছে। আমরা ভাঙন কবলিত এলাকায় ৫ শতাধিক জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছি। ভাঙনের পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। ইতোমধ্যে কিছু বাড়িসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন রোধে দ্রুত সময়ের মধ্যেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।