রাঙ্গামাটিতে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা, সতর্কতা জারি

ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও সচেতন করা হয়েছে।

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

Location :

Rangamati
রাঙ্গামাটিতে সতর্কতা জারি
রাঙ্গামাটিতে সতর্কতা জারি |নয়া দিগন্ত

রাঙ্গামাটিতে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে জেলার ১০টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে জেলার প্রত্যেক পাহাড়ি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে সতর্কবার্তা প্রচার করা হচ্ছে।

এছাড়া বিশেষ করে অতীতের পাহাড় ধসের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখে এবারো সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। জেলা শহর ছাড়াও কাউখালী, কাপ্তাই, নানিয়ারচর, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল, বিলাইছড়ি, রাজস্থলী, লংগদুসহসব উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় প্রশাসনের নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রাঙ্গামাটিতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ সরাসরি পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছেন। শুধু জেলা শহরেই ৩১টি স্থানকে বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভেদভেদি, শিমুলতলী, রূপনগর, যুব উন্নয়ন এলাকা এসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আশঙ্কাজনক হারে জনবসতি বাড়ছে। ২০১৭ সালের ধসের ক্ষতচিহ্ন এখনো দৃশ্যমান থাকলেও, মৃত্যুঝুঁকি উপেক্ষা করে পাহাড়ের ঢালে বসবাস করছে অসংখ্য মানুষ।

জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, পৌরসভা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সবাইকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মো: হাবিব উল্লাহ বিকেলে রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদি, লোকনাথ মন্দির ও বিএডিসি এলাকায় পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো পরিদর্শন করেন।

এ সময় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, ২০১৭ সালের ভয়াবহ পাহাড় ধস আমাদের শিক্ষা দিয়েছে। একটি প্রাণও যেন বিপদে না পড়ে, সেটিই আমাদের অঙ্গীকার। তাই আগেভাগেই প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও সচেতন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৩ জুনের ভয়াবহ পাহাড়ধস এখনো রাঙ্গামাটিবাসীর মনে তাড়া করে ফিরে। ওই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ১২০ জন, যাদের মধ্যে পাঁচজন সেনা সদস্যও ছিলেন। পাহাড় ধসের কারণে মানিকছড়ি শালবাগান এলাকায় রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক প্রায় ১০০ মিটার ধসে পড়েছিল, ফলে দীর্ঘ নয় দিন পুরো জেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। এরপরও ২০১৮ সালে নানিয়ারচরে এবং ২০১৯ সালে কাপ্তাইয়ে পাহাড় ধসে নতুন করে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।