টাকার অভাবে রাস্তার কাজ বন্ধ, গৌরীপুরে জনদুর্ভোগ চরমে

গৌরীপুর উপজেলা প্রকৌশলী অসিত বরণ দেব এ বিষয়ে জানান, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বারবার তাগিদ দেয়ার পরও কাজটি সম্পন্ন করেনি। তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

Location :

Gauripur
টাকার অভাবে থেমে গেছে রাস্তার কাজ, গৌরীপুরে জনদুর্ভোগ চরমে
টাকার অভাবে থেমে গেছে রাস্তার কাজ, গৌরীপুরে জনদুর্ভোগ চরমে |নয়া দিগন্ত

দুই কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় একবছর আগে রাস্তার মাটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী তিনমাস আগে এ রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে না হওয়ায় বেড়েছে জনদুর্ভোগ। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বেহাল এ রাস্তায় চলছেনা কোনো যানবাহন। জমে থাকা পানি আর কাদা মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। পরিবহনের অভাবে উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে না পারায় বিপাকে কৃষকরা।

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা থেকে মৈশহাটির রাস্তার চিত্র এটি। এদিকে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের মন্তব্য টাকা নেই বলে কাজ করাতে পারছেন না তিনি।

উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এলজিডির (এমআরআইডিপি) প্রকল্পের আওতায় উল্লেখিত এলাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার পাকা রাস্তা পাকাকরণে ২ কোটি ৮৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬২৬ শ’ টাকায় কাজটি পান নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর এলাকার ঠিকাদার মো: সারোয়ার জাহান। কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ শুরু করার তারিখ ০৫/০২/২০২৪ এবং শেষ করার তারিখ ০২/০১/২০২৫।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, প্রায় একবছর আগে রাস্তার মাটি খুঁড়ে বক্স কাটিং করে অর্ধেক রাস্তায় কাদামিশ্রিত বালু ফেলে রাখা হয়েছে। এরপর এ রাস্তার আর কোনো কাজ হয়নি। ঠিকাদার বা তাদের লোকজনের কোন খোঁজ-খবর নেই। এখন বৃষ্টির জমে থাকা পানি ও কাদায় রাস্তাটি চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী। এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে না কোনো যানবাহন। কৃষকদের উৎপাদিত ধান ও অন্য ফসল বাজারে বিক্রি করতে পারছে না।

গৌরীপুর উপজেলার সাথে নেত্রকোনার সদর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের সংযোগ রাস্তা এটি। প্রায় ১৫টি গ্রামের মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। রাস্তাটির বেহাল অবস্থায় বর্তমানে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় লোকজনের।

রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো: রতন জানান, একবছর আগে খুঁড়ে রাখা প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তার অর্ধেক জায়গায় মাটিযুক্ত বালু ফেলা ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে রাস্তাটির বেহাল অবস্থা। ধানসহ উৎপাদিত ফসল নিয়ে তারা আছেন বিপাকে। রাস্তার কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানান তিনি।

স্থানীয় মো: খুর্শেদ আলী জানান, ধান কেটে ক্ষেতের পাশেই রেখে দেয়ার ফলে নষ্ট হচ্ছে। কোনো বেপারীও আসে না ধান কেনার জন্যে। রাস্তার বেহাল দশা দেখেই ফিরে যান তারা।

তিনি আরো জানান, বৃষ্টি এলেই মাটিকাটা এ রাস্তায় হাটু সমান পানি জমে। জরুরি প্রয়োজনে একজন রোগী নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা এলাকাবাসী খুবই বিপদে আছি।

এবিষয়ে রাস্তার ঠিকাদার মো: সারোয়ার জাহান বলেন, ‘আমার কাছ থেকে যে ঠিকাদার কাজটি নিয়েছিলেন, ৫ আগস্টের পর তার নামে বেশকয়েকটি মামলা হওয়ায় তিনি এখন বাড়ি ছাড়া। এ জন্যে সমস্যা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘মালামাল সংকটের কারণে কাজটি করা যাচ্ছে না। ঠিকাদারের টাকা নেই তাই কাজ করাতে পারছি না।’

গৌরীপুর উপজেলা প্রকৌশলী অসিত বরণ দেব এ বিষয়ে জানান, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বারবার তাগিদ দেয়ার পরও কাজটি সম্পন্ন করেনি। তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।