জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, গণহত্যার বিচার এবং সংবিধানের মৌলিক সংস্কার ছাড়া যেনতেন নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করছে ইউনূস সরকার। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের মানুষ আওয়ামী স্টাইলের নির্বাচন আর মেনে নেবে না। আমরা ফেব্রুয়ারি মাসেই নির্বাচন চাই, এর কোনো ব্যত্যয় গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে অবশ্যই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করে সেই সনদের অধীনেই নির্বাচন দিতে হবে।’
আজ শনিবার বগুড়া শহরের শহীদ টিটু পৌর পার্ক মিলনায়তনে শহর জামায়াতের ষান্মাসিক সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশের মানুষ বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ড. ইউনূসকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। এখান থেকে পিছু হটার সুযোগ নেই। হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্তু আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, ড. ইউনূসের চারপাশে ফ্যাসিবাদের দোসর ও ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা সরকারকে বিভ্রান্ত করছে এবং একটি দলের পকেটে ঢুকানোর চক্রান্ত করছে।
তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান কোনো দল বা ব্যক্তির নেতৃত্বে হয়নি, বরং দেশের ১৮ কোটি মানুষ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তির জন্য রক্ত ঢেলে দিয়েছে। সরকারকে জনগণের মুখের ভাষা বুঝতে হবে, ব্যর্থ হলে পরিণতি শুভ হবে না।
তিনি আরো বলেন, পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে। এই হত্যার সাথে জড়িত বিচারক, আইনজীবী, সাক্ষীসহ সবাইকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। প্রশাসনের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদেরও গ্রেফতার করতে হবে। সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী, দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়। জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।
শহর জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আবিদুর রহমান সোহেলের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দীন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী, বগুড়া অঞ্চলের টিম সদস্য অধ্যাপক মাওলানা আব্দুর রহিম ও অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।
শহর সেক্রেটারি অধ্যাপক আ.স.ম আব্দুল মালেকের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য দেন জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকার, শহর নায়েবে আমির মাওলানা আলমগীর হুসাইন ও মাওলানা আব্দুল হালিম বেগ, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক রফিকুল আলম, অ্যাডভোকেট মো: আল-আমিন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের শহর সভাপতি আজগর আলী এবং ইসলামী ছাত্রশিবির বগুড়া শহর শাখার সভাপতি হাবিবুল্লাহ খন্দকার।
উক্ত সম্মেলনে বগুড়া শহর শাখার (সাংগঠনিক জেলা) প্রায় দেড় হাজার পুরুষ ও নারী রুকন অংশগ্রহণ করেন।