লোহাগাড়া বড়হাতিয়ায় উদ্বোধনের আগেই ব্রিজে ফাটল

লোহাগাড়ার বড়হাতিয়া ইউনিয়নে উদ্বোধনের আগেই একটি ব্রিজে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে এলাকায় নানা আলোচনা-সমালোচনা লক্ষ করা গেছে।

মোছাদ্দেক হোসাইন, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম)
লোহাগাড়া বড়হাতিয়ায় উদ্বোধনের আগেই ব্রিজে ফাটল
লোহাগাড়া বড়হাতিয়ায় উদ্বোধনের আগেই ব্রিজে ফাটল |নয়া দিগন্ত

লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নে উদ্বোধনের আগেই একটি ব্রিজে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে এলাকায় লোকমুখে নানা আলোচনা-সমালোচনা লক্ষ করা গেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ব্রিজটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। শুধুমাত্র উদ্বোধন বাকি এই অবস্থায় এমন ঘটনার পর এ নিয়ে সর্বত্র হাস্যরসের সৃষ্টির পাশাপাশি ঠিকাদারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

জানা গেছে, ব্রিজটিতে নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। ব্রিজটির নির্মাণ কাজ করেছে ‘মের্সাস চৌধুরী ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে উপ- ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছেন মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির মালিক একই উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন হেলালী।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রাণালয়ের অধীন গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় কুমিরাঘোনা বায়তুশ শরফ রোডে মহাবোধী বিহার সংলগ্ন খালের ওপর বক্স কালভার্ট নির্মাণ বা ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ১৫ মিটার। ব্রিজটির নির্মাণের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ৯৫১ টাকা।

স্থানীয়রা জানান, অনেক আগে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু করার কথা থাকলেও ভরা বর্ষা মৌসুমে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। তার ওপর নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। পরিমাণ মতো সিমেন্ট কংক্রিট ও বালু না দিয়ে কোনো মতে নির্মাণ শেষ করে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। লোহাগাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ কেউ নির্মাণ কাজ তদারকি করেননি। নির্মাণ কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করলেও কর্মকর্তারা আর্থিক সুবিধা নিয়ে কোনো ধরণের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

গত সোমবার রাতে ব্রিজের সংযোগ সড়কে উভয় পাশে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করলে ব্রিজটির পশ্চিম পাশে ফাটল দেখা দেয়। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকেই নির্মাণ কাজের ঠিকাদারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি করেছেন।

স্থানীয়রা ক্ষোভের সাথে জানান, যে ব্রিজের উদ্বোধন বা গাড়ি চলাচল শুরুর আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে, সেই ব্রিজে আদৌ কি গাড়ি চলাচল সম্ভব? স্থানীয়রা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের শাস্তির দাবির পাশাপাশি ব্রিজটি ভেঙে পুনঃনির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কর্ণফুলীর সাথে কথা হয় বড়হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা জুনাইদ চৌধুরীর সাথে।

তিনি বলেন, কুমিরাঘোনা রাস্তায় মাটি ভরাটের সময় স্কেভেটরের সামন্য ধাক্কা লেগে ব্রিজের বাইরের অংশের পিলারে ফাটল তৈরি হয়। ঠিকাদার অবিলম্বে এটি মেরামত করে দিবেন বলেছেন।