মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে মো: কামরুজ্জামান রতনকে ধানের শীষের প্রার্থী ঘোষণা করার পর শহরজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মনোনয়ন প্রকাশের পরপরই সম্ভাব্য প্রার্থী মো: মহিউদ্দিন আহমেদের সমর্থকেরা রাস্তায় নেমে আসেন। এ সময় তাদের একাধিক পয়েন্টে বিক্ষোভ, টায়ার জ্বালানো ও সড়ক অবরোধের পর পুরো শহর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে এ আন্দোলন করেন দলটির একাংশের নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, মহিউদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে সদর ও গজারিয়া অঞ্চলে বিএনপির সংগঠন শক্তিশালী করতে সক্রিয় ছিলেন। জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকালেও তিনি তৃণমূলে প্রভাব বিস্তার করেছেন। আন্দোলন-সংগ্রাম, সাংগঠনিক পুনর্গঠন ও স্থানীয় নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ করতে তার ভূমিকা রয়েছে বলে সমর্থকদের দাবি। এসব কারণে তৃণমূলের বড় অংশ নিশ্চিত ছিলেন যে এবার মনোনয়ন তার পক্ষেই যাবে। তবে মনোনয়নে রতনের নাম প্রকাশিত হওয়ার পরই সুপার মার্কেট এলাকা ও হাটলক্ষীগঞ্জে মহিউদ্দিনের সমর্থকেরা মিছিল বের করেন।
‘তৃণমূলের মতামত নিতে হবে’ ও ‘মহিউদ্দিনকে মনোনয়ন দাও’ ইত্যাদি স্লোগানে পুরো এলাকা মুখর হয়ে ওঠে। বেশ কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেন। এতে যান চলাচল কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। তাদের দাবি, মাঠে যে গ্রহণযোগ্যতা মহিউদ্দিন তৈরি করেছেন, তা মূল্যায়ন করা উচিত ছিল।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা বিএনপির কেন্দ্রীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী কামরুজ্জামান রতনের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। তারা অবিলম্বে এ মনোনয়ন প্রত্যাহার করে মহিউদ্দিন আহমেদকে প্রার্থী ঘোষণার দাবি জানান। একইসাথে মহিউদ্দিনের সমর্থকরা রাস্তা অবরোধ করে মির্জা ফখরুলবিরোধী স্লোগান দেন।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করেছে। জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সন্ধ্যার পর উত্তেজনা আরো বাড়লে সিনিয়র নেতারা বিক্ষোভকারীদের সাথে কথা বলে শান্ত করার চেষ্টা করেন।
রতনের সমর্থকেরা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং সবাইকে নির্বাচনী মাঠে দলীয় ঐক্য বজায় রেখে কাজ করতে হবে।
তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি, তৃণমূলকে উপেক্ষা করলে নির্বাচনী মাঠে বিভক্তি তৈরি হবে।
এদিকে রাত বাড়ার সাথে সাথে উত্তেজনা কিছুটা কমলেও শহরজুড়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মহিউদ্দিনের সমর্থকেরা জানিয়েছেন, আগামীতে আরো কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে কি না তা আলোচনার ভিত্তিতে ঠিক করা হবে।



