বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, ‘পাঁচ দফা বাস্তবায়ন না হলে বাংলাদেশে আবার স্বৈরাচারের পুনরুত্থান হবে। দেশ স্বৈারাচারী ব্যবস্থার দিকে ফিরে যাবে।’
রোববার (৫ অক্টোবর) ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ময়মনসিংহ-৫ মুক্তাগাছা আসনে জামায়াতের সদস্য সদস্য পদপ্রার্থী মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন ছাড়া চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান সম্ভব নয়।’
জুলাই জাতীয় সনদকে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়ক একটি ‘জাতীয় ঐকমত্যের দলিল’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী একটি ইতিবাচক রাজনীতির ধারক ও বাহক। আমরা সংঘাত নয়, পরিবর্তনের রাজনীতি করি।’
অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ ঘোষিত না হয়, এর যদি আইনি ভিত্তি না থাকে তাহলে বর্তমান সরকারের ৪২৪ দিনের রাষ্ট্র পরিচালনা অবৈধ হয়ে যাবে। তাহলে এই সরকারকে বিচারের সম্মুখিন হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনীতিবিদগণ কথা বলেন ক্ষমতায় যাওয়ার রাস্তা কোনটা সহজ সেটাকে সামনে রেখে। আর জামায়াত কথা বলে কোনটা করলে দেশ ও জনগণের কল্যাণ হবে, জাতির জন্য সুফল হবে সেই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্যের কারণে মূল্যায়নেও পার্থক্য হয়ে গেছে।’
মহানগর জামায়াতের আমির ও ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনে জামায়াতের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা কামরুল আহসান এমরুলের সভাপতিত্বে সভায় মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ও ময়মনসিংহ-৭ ত্রিশাল আসনে জামায়াতের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আসাদুজ্জামান সোহেল, সহকারী সেক্রেটারি মাহবুবুল হাসান শামীম, জামায়াত নেতা আনোয়ার হোসেন সুজন, খন্দকার আবু হানিফ ও ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বারিসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের এই নেতা আরো বলেন, আজকে যারা ‘পিআর’ বুঝে না। বলে, এটা খায় না মাথায় দেয় এটা জনগণ বুঝে না। আসলে জনগণ ঠিকই বুঝে কিন্তু আপনারাই বুঝেন না। জনগণ বোঝার কারনেই জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী ২৬টি দল পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাচ্ছে। সুতরাং জনগণ বোঝে না কে বলেছে। আপনারাই গোয়ার্তমি করছেন। আসলে আপনারাই নির্বাচন চাচ্ছেন না।’
তিনি বলেন, ‘যারা এখন বলছে আমরা পিআর বুঝি না, তারা একসময় কেয়ারটেকার গভমেন্টও বুঝতে পারেনি, পরে ঠিকই বুঝতে পেরেছে ১১ বছর পর। এবারও তারা পিআর পদ্ধতি বুঝতে পারছে না, কিন্তু দেশের জনগণ ঠিকই পিআর পদ্ধতি বুঝতে পেরেছে।’ পাঁচ দফা দাবি আদায়ের মাধ্যমেই দেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘যেভাবে আপনাদের জনগণের সমর্থন কমছে, গত বছর যা ছিল গত জুলাইয়ে তার চেয়েও কমেছে, ডাকসু নির্বাচনের পর যা কমেছে এখন আবোল-তাবোল বক্তব্যের পর তার চেয়ে আরো কমছে। জাতির সামনে একটি বিরাট প্রশ্ন- তাহলে কি আপনারাই আগামী নির্বাচন বানচাল করতে চাচ্ছেন?’
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ বলন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ ঘোষিত না হয়, এর যদি আইনি ভিত্তি না থাকে তাহলে বর্তমান সরকারের ৪২৪ দিনের রাষ্ট্র পরিচালনা অবৈধ হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘একশো পারসেন্ট ভোটের পার্লামেন্ট হতে হবে। এতে শতভাগ ভোটারের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে। ৩০% বা ৪০% ভোট নিয়ে রাষ্ট্র চালাবেন, এটাকে পিউর ডেমোক্রেসি বলতে পারছি না। এজন্যই আগামীতে পিআর সিস্টেমে নির্বাচন চাচ্ছি। এই নির্বাচন হলে কালো টাকার ব্যবহার, কালো বাজারী, মাস্তানী, কেন্দ্র দখল আর ভোট বাণিজ্য বন্ধ হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইতোমধ্যেই প্রকাশিত একটি জরিপে দেখা গেছে জামায়াতের ভোট বেড়েছে। ডাকসু, জাকসুর নির্বাচনের পর ভোট আরো বেড়েছে। রাকসু, চাকসুসহ অন্যান্য নির্বাচন হয়ে গেলে ইনশাল্লাহ যুব সমাজের মাঝে এর প্রভাব প্রতিফলনের মধ্যদিয়ে শতভাগ জামায়াতের দিকে ঝুকে যাবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাডভোকেট আকন্দ বলেন, ‘বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে কোনো ‘কাদা ছোড়াছুড়ি’ নেই, যা হচ্ছে সেটি রাজনৈতিক ডিবেট।’