মতলব (চাঁদপুর) সংবাদদাতা
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় এক অটোরিকশা চালককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় লোকজন ধাওয়া দিলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার নারায়ণপুরের বাদামগাছতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত অটোরিকশা চালকের নাম শাওন সরকার (২১)। তিনি উপজেলার উত্তর নলুয়া এলাকার ইকবাল সরকারের ছেলে। মা রোকসানা বেগমকে নিয়ে তিনি উপজেলা সদরের টিঅ্যান্ডটি এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।
কিছুদিন আগে স্ত্রীর সাথে শাওনের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ভাড়া করা অটোরিকশা চালিয়ে চলত মা-ছেলের সংসার।
নিহতের মা রোকসানা বেগম কান্নাজরিত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলেই ছিল সবকিছু। ছেলের আয় দিয়েই সংসারের খরচ চলত। কে এখন আমার সংসার চালাবে? খুনিদের যেনো আইন সঠিক বিচার করে।
গতকাল রাতের এই ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নারায়ণপুর বাজার এলাকা থেকে মাছুয়াখাল এলাকায় যাওয়ার জন্য রাত ৯টার দিকে দুর্বৃত্তরা যাত্রীবেশে শাওনের অটোরিকশায় ওঠে। বাদামগাছতলা এলাকায় পৌঁছালে তারা নেমে যাওয়ার কথা বলে অটোরিকশাটি থামায়। সেখানে থামাতেই শাওনের মাথা, চোখ, মুখ, কপালসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। একপর্যায়ে তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে যায়। এ সময় লোকজন ধাওয়া দিলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এরপর শাওনকে সেখান থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহাম্মদ বলেন, নিহত শাওনের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। প্রাথমিকভাবে এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড মনে হচ্ছে।
ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। হত্যামামলা প্রক্রিয়াধীন।
পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত কিছু আলামত আমরা জব্দ করেছি। ওই আলামতের সূত্র ধরেই আমরা প্রাথমিকভাবে যাদের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা পেয়েছি ওই তিনজনকে আটক করতে পেরেছি। এ ছাড়া একটা পিক-আপে বেঁধে অটোবাইকটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আমরা সেটাও শনাক্ত করেছি। আমরা অচিরেই তাকেও আটক করতে সক্ষম হবো।