বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, গত সতের বছরের ইতিহাস ভয়াবহ ইতিহাস। আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা যেভাবে মানুষের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করেছে, পৃথিবীর ইতিহাসে এই নিষ্ঠুরতার কোনো তুলনা নেই।
তিনি বলেন, হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে তারা। কেবলমাত্র গত বছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার নির্দেশে ১৪ শত লোককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ত্রিশ হাজারের মতো ছাত্র-যুবক ও রাজনৈতিক কর্মীরা আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে লালমোহনের মঙ্গলসিকদার বাজারে হরিসাধুর মন্দিরের ভবনের নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের পর হিন্দু সমাজের সাথে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, হাসিনার দুঃশাসন এতোই চরমে পৌঁছে গিয়েছিলো যে, সাধারণ মানুষ, ছাত্র, অভিভাবক সবাই মিলে গণঅভ্যুত্থানের সূচনা করে তাদের পতন ঘটিয়েছে। অত্যাচারী আওয়ামী লীগ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।
মেজর হাফিজ বলেন, গত ৩টি নির্বাচনে দেশে নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছিলো। যারা ভোটার ছিলেন, ভোট দিতে পারেনি। অনেক তরুণেরা ভোটার হয়েছে, ভোট দেয়ার সুযোগ তারা পায়নি। আওয়ামী লীগের গুণ্ডাবাহিনী নির্বাচনের আগের রাতেই ব্যালটে সিল মেরে অবৈধভাবে তাদের বাক্স ভরলো।
তিনি বলেন, আট বছর পর আমি এলাকায় আসি। আমি কোনো বহিরাগত না। আমার জন্ম এই লালমোহনেই। আমার পিতা ৩ বার এমপি ছিলেন পাকিস্তান আমলে। আমাকে কিভাবে বাধা দেয়া হয়েছিলো সবাই দেখেছে। আমার বাসা পুলিশ দিয়ে ঘিরে রেখেছিলো। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরাও ঘিরে রাখে। ১৫ দিন আমি বের হতে পারিনি। নির্বাচনের দিন আমাকে একটা মিথ্যা মামলা দেয়া হয়। অনেক স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশকে ঘিরে। একটা সুন্দর রাষ্ট্র চাই যেখানে প্রত্যেক মানুষের মর্যাদা থাকবে। আমি কোনো দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিলাম না। মেধা দেখে চাকরি দিয়েছি, কে কোন দল করতো তা দেখিনি।
রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করে পুলিশের গুলির সামনে দাঁড়িয়েছে। তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার কারণে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ রায় কার্যকর করতে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
বিদেশে কর্মরত আমাদের শ্রমিকরা যে টাকা পাঠায়, এই টাকা লোপাট করে তারা আবার বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা, হাসিনা, তার বোন রেহানা এবং অন্যান্য মন্ত্রীরাদের হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বিদেশে। বাংলাদেশে কোনো কলকারখানা করে নাই। বাংলাদেশের মানুষের কোনো সাধারণ মানুষকে তারা সাহায্য করে নাই। এরা হলো লুটেরা পার্টি, এরা জন্ম নিয়েছে লুটপাটের জন্য। তাদের ভূমি প্রতিমন্ত্রী জাবেদের লন্ডন শহরে, দুবাইতে, আমেরিকাতে ৩৬০টি বাড়ি আছে। হাসিনা, রেহনা এদের সম্পত্তি ছিলো লন্ডনে, ব্রিটিশ সরকার বাজেয়াপ্ত করেছে।
মঙ্গলসিকদার হরিসাধুর মন্দির কমিটির সভাপতি পবন কান্তি শীলের সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. জাফর ইকবাল, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বাবুল, পৌরসভা বিএনপির সভাপতি ছাদেক মিয়া জান্টু, লালমোহন উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নীরব কুমার দে, ধলীগৌরনগর (পূর্ব) ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. ইউসুফ মেম্বার, পশ্চিম শাখার সভাপতি দেলোয়ার হোসেন নসু, যুবদল সভাপতি আজাদ হোসেন সোহাগ প্রমুখ।



