রংপুরে সংবাদ প্রকাশের জেরে সিনিয়র সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদলকে অপহরণ করে সিটি করপোরেশনে নিয়ে মারধর ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার চেষ্টার মামলায় রকিবুল ইসলাম সাগর নামে আরো একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বদলি করা হয়েছে সিটি করপোরেশনের তিন কর্মকর্তাকে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সোয়া ১টায় রংপুর মহানগর এলাকা থেকে সাগরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার সাগর নগরীর শালবন মিস্ত্রিপাড়ার মসসিন মিয়ার ছেলে।
রংপুর মহানগর পুলিশের কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান জানান, মামলার এজাহারভূক্ত ৬ নম্বর আসামি সাগর। এর আগে, সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয় ৫ নম্বর আসামি রতন মিয়াকে। তিনি রংপুর অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন আমলি আদালতরে বিচারক রাশেদ হোসাইনের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে এ ঘটনার সাথে নিজের এবং জড়িতদের বিষয়ে জানিয়েছেন। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির আবেদন করেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক সংবাদ, একুশে টেলিভিশন ও বাংলা ট্রিবিউনের সিনিয়র রিপোর্টার এবং রংপুর সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের সদস্য সচিব লিয়াকত আলী বাদলকে কাচারী বাজার থেকে ‘জুলাই রাজবন্দির’ পরিচয়ে রকি নামের এক যুবকের নেতৃত্বে অপহরণ করে সিটি করপোরেশনের মধ্যে নিয়ে মারধর করা হয়। পরে নতুন ভবনের দো’তলায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নিউজের জন্য ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার চেষ্টা করা হয়। এ এসময় সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসের প্রধান ফটক আটকে দেয়।
এ ঘটনায় সাংবাদিক বাদল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতেমা, ট্রেড লাইসেন্স শাখার প্রধান মিজানুর রহমান মিজু, সাবেক কাউন্সিলর লিটন পারভেজসহ ১৪ জনের নামে মামলা দায়ের করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিভাগজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে সাংবাদিকরা।
রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনার জেরে সিটি করপোরেশনের ট্রেডলাইসেন্স শাখার প্রধান মিজানুর রহমান মিজু, প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর কবির শান্ত এবং সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা তম্ময়কে বদলি করা হয়েছে।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর লিয়াকত আলী বাদল দৈনিক সংবাদে ‘রংপুরে জুলাই যোদ্ধার নামে অটোরিকশার লাইসেন্স, পাঁচ কোটি টাকার বাণিজ্যের পায়তারা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। ওই সংবাদের জেরে তাকে অপহরণ করে নিয়ে মারধর ও তার প্রকাশিত সংবাদের জন্য ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করানোর চেষ্টা করা হয়।